রাঙামটিতে শেষ হলো সাংগ্রাই জলউৎসব

NewsDetails_01

মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলউৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বৈসাবি উৎসব। নানা উৎসাহ আর উদ্দীপনায় পাহাড়ে শেষ হলো প্রানের উৎসব বৈসাবী। অরণ্যের শহর রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণের এর মহান উৎসব,আদিবাসীদের প্রাণের উৎসব ‘বৈসাবি’।
বুধবার মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই জলউৎসবের মাধ্যমে শেষ হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবী। পুরাতন বছরের সকল গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরের শুভ কামনার জন্য বৃহত্তম এ আয়োজন করা হয় প্রতিবছর। পার্বত্য জনপদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছরের ন্যায় মারমা সংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) আয়োজন করে এ মনোরম অনুষ্ঠানের। বুধবার উৎসব উপলক্ষে মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) এর উদ্যোগে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এর পরপরই মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে ওঠে সাংগ্রাই জল উৎসবে। পাশাপাশি দিনভর নৃত্যসঙ্গীত পরিবেশন করেন, মারমা সম্প্রদায়ের শিল্পীগোষ্ঠী।
বুধবার জেলা সদরের আসামবস্তীর নারিকেল বাগান এলাকায় অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী জলউৎসব। মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস)এর সভাপতি অংসউ প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জলকেলী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটির মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, জেলা প্রশাসক মো. একে এম মামুনুর রশীদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উদ্বোধক সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, অতীতের সব দীনতা ছিন্নতা ধূয়ে মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।
এদিকে,উৎসবে হাজার হাজার আদিবাসী নর নারী ছাড়া ও কয়েকহাজার বাঙালী নরনারী উপস্থিত থেকে এ উৎসবে অংশ গ্রহন করেন। পাহাড়ী বাঙালীর পদধুলীতে এক মহামিলন মেলায় পরিণত হয় মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব।
একদিকে বিশালাকার মঞ্চে মারমা শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর গান আর নাচ আর অন্যদিকে তখন চলছিলো মারমা তরুন তরুণীদের জলউৎসব। ভালোবাসা আর স্নিগ্ধতার জলে একে অপরকে ভিজিয়ে দিচ্ছিলো মারমা অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা তরুণ তরুণীরা। পরম স্নিগ্ধতায়,ভালোবাসায়,শ্রদ্ধায় ভিজিয়ে দেয় পরস্পরকে। একে অপরের প্রতি পানি ছিটানোর মাধ্যমে নিজের মধ্যে যে ভালোবাসার এক অজানা অনুভুতি লুকিয়ে ছিলো তা প্রকাশ করেছে প্রতিটি মারমা তরুন- তরুনীরা। সাম্প্রতিক সময়ে বৈসাবি উৎসবের অন্যতম আকর্ষন হলো মারমা তরুন তরুণীদের এই জলউৎসব। জলউৎসব খেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে কেবল মারমারাই নয়,ছুটে আসে বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের হাজারো মানুষ।

আরও পড়ুন