মানবতার সেবায় সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে : বৃষ কেতু চাকমা

NewsDetails_01

সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা
রাঙামাটিতে একটানা ভারী বর্ষনে স্মরনকালের ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় যে সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের সব ধরনের সহায়তা করতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে সরকারের অনেক মন্ত্রী ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাঙামাটির দূর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে নিহতদের পরিবার ও আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা পরিবারদের সাথে কথা বলেছেন এবং তাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বরাদ্ধ দিয়েছেন। বুধবার বিকেলে জেলা পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন থেকে পরিষদ হতে পাহাড় ধসের ঘটনায় সকল নিহত, আহত এবং আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা আশ্রিতদের খাবার চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরন করেছে জেলা পরিষদ। রাঙামাটির কর্মরত সংবাদকর্মীরা জেলা পরিষদের কার্যক্রমের পাশে থেকে পরিষদের কর্মকান্ড তুলে ধরে যে সহায়তা দিয়েছে তা প্রসংসনীয়। তিনি এসময় মানবতার সেবায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহব্বান জানান। এ সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (ভাঃ) ছাদেক আহমদ, পরিষদের সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর, স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, মনোয়ারা জাহান আক্তার, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, তিনি ও তার পরিষদবর্গ ১৩জুন ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে নিহত ও আহতদের খোঁজ খবর নিতে জেনারেল হাসপাতালে তাৎক্ষনিক ছুটে যান। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের আহতদের সুচিকিৎসা ও ঔষুধ বিতরনের নির্দেশ দেন এবং নিহতদের সুষ্ঠভাবে দাফন-কাফন-সৎকার করার জন্য হাসপাতালে থাকা নিহত পরিবারদের মাঝে তাৎক্ষনিক নগদ ২০হাজার টাকা করে প্রদান করেন। পরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নিহত পরিবারদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরন করেন।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, গত ১৩জুন থেকে ভারী বর্ষণের কারণে শহরে বিদ্যুৎ, খাবার পানি ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে চরম ভোগান্তিতে পরেছিল সাধারণ জনগন। বিশেষ করে রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে আগত সংবাদকর্মীদের চ্যানেল ও পত্রিকায় নিউজ প্রেরনে। এ সমস্যা থেকেও জেলা পরিষদ জেনারেটারের মাধ্যমে সাধারণ জনগনদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, মোবাইল চার্জের জন্য সুযোগ দেন।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে আগত সংবাদকর্মীদের চ্যানেল ও পত্রিকায় নিউজ প্রেরনের জন্য পরিষদের একটি কক্ষ ও মিনি কনফারেন্স রুম এবং ওয়াই ফাই নেটওর্য়াক সংবাদকর্মীদের ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে সারাদেশে দূর্যোগের খবরটি ছড়িয়ে পরলে সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে দূর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে আসে।
সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, রাঙামাটি শহর, কাপ্তাই, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলার ১১৪জন নিহত পরিবারদের হাতে জেলা পরিষদ হতে এ পর্যন্ত নগদ ২০হাজার টাকা করে মোট ২২লক্ষ ৮০হাজার টাকা ও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা পরিবারদের মাঝে পরিষদ থেকে খাবার বিতরণ করা হয় ।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথ, রিপোটার্স ইউনিটির চৌধুরী হারুনুর রশিদ, জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা জান্নাত মুমু।
সংবাদকর্মীরা বলেন, এ ধরনের দূর্যোগে পরিষদ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা বিপদগ্রস্থ মানুষদের অনেকটা সাহস যুগিয়েছে। এ জেলার পিছিয়ে পরা মানুষদের ভাগ্য উন্নয়ন ও এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সহযোগিতায় জেলা পরিষদ সবসময় পাশে ছিল এবং আগামীতে থাকবে। দূর্যোগে সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন চ্যানেল ও পত্রিকায় নিউজ প্রেরনে সহায়ক ভ‚মিকা রাখায় পরিষদের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
চেয়ারম্যান ও পরিষদের কর্মকর্তারা সংবাদকর্মীদের চ্যানেল ও পত্রিকায় নিউজ প্রেরনের জন্য পরিষদ কার্যালয়ে একটি কক্ষ ও ওয়াইফাই ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন