স্থানীয় সরকার পাবে সাধারণ বরাদ্দ

NewsDetails_01

downloadস্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে বিশেষ বরাদ্দ আর দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ দীর্ঘদিনের প্রচলিত প্রথা রহিত করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করেছে। ফলে মন্ত্রণালয় থেকে আর কারও আবেদনের ওপরে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সব জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদে এগুলো সাধারণ বরাদ্দ হিসেবে দেওয়া হবে। বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজস্ব আয়কে বিবেচনায় নেওয়া হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব আয় কম হয়, বরাদ্দের ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক সমকালের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন সমকালকে বলেন, ‘বিশেষ বরাদ্দের নামে বলতে গেলে এক ধরনের দুর্নীতি হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ দিয়ে কিংবা অবৈধ উপায়ে যে কেউ এমপি-মন্ত্রীর ডিও লেটার নিয়ে ওই টাকা নিয়ে যায়। বরাদ্দের টাকা ব্যবহার সম্পর্কেও সঠিক তথ্য জানা যায় না।’ তিনি জানান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতি বন্ধসহ সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ বরাদ্দ এবং সংরক্ষিত তহবিল বাতিল করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ বরাদ্দের প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে বিশেষ প্রকল্প নিয়ে তার বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে পারে। এরকম প্রকল্প পেলেই শুধু বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির সাধারণ বরাদ্দ থেকে টাকা কেটে নিয়ে তা বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে দেওয়া অসঙ্গত।’
এর আগে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ থেকে একটি অংশ ‘বিশেষ’ হিসেবে রেখে দেওয়া হতো, যা সাধারণত মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী ও সচিব দিতেন। বিশেষ করে মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের আবেদনের ওপর এ বরাদ্দ দেওয়া হতো। বিশেষ বরাদ্দ পেতেন বিশেষ ব্যক্তিরা। এতে একই প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিকবার বরাদ্দেরও অভিযোগ রয়েছে।
চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে জেলা পরিষদের বরাদ্দ রয়েছে তিনশ’ ৯০ কোটি টাকা, সিটি করপোরেশনে দুইশ’ কোটি টাকা, পৌরসভায় চারশ’ কোটি টাকা ও উপজেলা পরিষদে তিনশ’ কোটি টাকা। এগুলো চারটি কিস্তিতে ভাগ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক বলেন, ‘বিশেষ বরাদ্দের প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এখন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ বরাদ্দ দেওয়া হবে। তারাই ঠিক করবেন কোনো প্রতিষ্ঠানকে কত টাকা দিতে হবে। সাধারণ বরাদ্দ বিভাজনের সময় যেসব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয় কম তাদের একটু বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা সে অর্থ এলাকার উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ পেতে এখন আর কাউকে মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না।’ এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম কিস্তির অর্থ বিভাজনও করা হয়েছে।
প্রতি বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে মন্ত্রীর জন্য একশ’ কোটি টাকা এবং সচিবের জন্য মোট বরাদ্দের দশ শতাংশ বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত ছিল। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য এ বরাদ্দ নিয়ে ব্যয় করতে পারতেন। তবে মন্ত্রীর সংরক্ষিত তহবিলের টাকা মূলত এমপিদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হতো, যে প্রথা এ বছর থেকে বাতিল হলো। সূত্র : সমকাল

আরও পড়ুন