‘আলোর ফেরিওয়ালাও’ সেই দালালদের মতোই: ভুক্তভোগী

NewsDetails_01

দালালদের খপ্পর থেকে জনগণের ভোগান্তি কমাতে গত ৬ জানুয়ারি থেকে মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ নামে আখ্যায়িত পল্লী বিদ্যুতের দুইটি দল। সংযোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের রসিদ দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানছে না টিমের সদস্যরা। আর এক্ষেত্রে গ্রাহকরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে সাত-পাঁচ বুঝিয়ে দিচ্ছে টিম।

মণিরামপুর উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকার শামছুদ্দিনের বাড়িতে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ টিম যায় ২০ জানুয়ারি দুপুরে। দ্রুত তার বাড়িতে মিটার লাগিয়ে সংযোগ দেওয়া হয়। এসময় তারা শামছুদ্দিনের কাছ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা নিলেও তাকে রসিদ দিয়েছে মাত্র ৯৬৫ টাকার।

একইভাবে অমল মণ্ডলের বাড়িতে সংযোগ দিয়ে এক হাজার ১৫০ টাকা নিয়েছে টিম। তাকে দিয়েছে মাত্র ৫৬৫ টাকার রসিদ। একই সময়ে পাশের মাহমুদকাটি গ্রামের জামাল হোসেনের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে টিমের সদস্যরা তিন হাজার ৫০০ টাকা নিলেও তাকে রসিদ দেওয়া হয়েছে ৫১৫ টাকার।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ অফিস সূত্রে জানা যায়,বাড়িতে ওয়্যারিং করা থাকলে এক কিলোওয়াট শক্তির সংযোগ দিয়ে টিম ৫৬৫ টাকা গ্রহণ করতে পারবে। যদি দুই কিলোওয়াট শক্তি হয় বা পাকা বাড়ি হয়, সেক্ষেত্রে আরও ৪০০ টাকা গ্রাহককে দিতে হবে। আর যদি ওয়্যারিং করে সংযোগ দেওয়া হয় তাহলে এর সঙ্গে ওয়ারিংয়ের সরঞ্জামের মূল্য যোগ হবে। তবে এসব টাকা অবশ্যই ভাউচারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।

NewsDetails_03

অমল মণ্ডলের ভাই কোমল মণ্ডল বলেন, ‘সংযোগ দেওয়ার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। আমাদের ঘরে আগ থেকে ওয়্যারিং করা ছিল। ওরা শুধু মিটার বসিয়ে সংযোগ দিয়ে এক হাজার ১৫০ টাকা নিয়েছে। আর ভাউচার দিয়েছে ৫৬৫ টাকার। বাকি টাকার কথা জিজ্ঞেস করলে বলেছে, ‘অফিস খরচ লাগবে।’

তার অভিযোগ, ‘আলোর ফেরিওয়ার কথা শুনে প্রথমে খুশি হইছি। ভাবসি, এবার হয়তো আর দালালদের টাকা দিতি হবে না। সঠিকভাবে কম খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ পাব। কিন্তু এখন দেখছি, এই টিমের কাজও সেই দালালদের মতোই।

জামাল হোসেন অভিযোগ করেন, ‘আমি ভ্যান চালায়ে খাই। বাড়ি কারেন্ট নিয়ার জন্যি অনেক যোগাযোগ করিছি। রবিবার আলোর ফেরিওয়ালা দেখে খুশি হয়ে তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে যাই। আমার মাটির ছোট্ট একটা ঘর। তারা ঘর ওয়্যারিং করে লাইন দিয়ে আমার কাছ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছে। রসিদ দিয়েছে মাত্র ৫১৫ টাকার।’

এদিকে, গ্রাহকদের অভিযোগ পেয়ে সোমবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন তদন্তে যান যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজগঞ্জ শাখার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) ফাকরুল ইসলাম। তিনি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আব্দুর রসিদ মৃধার ভাষ্য, ‘গ্রাহকদের হয়রানি কমাতে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে আলোর ফেরিওয়ালা টিম কাজে নেমেছে। তাদের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুন