পার্বত্যাঞ্চলে কমেছে ম্যালেরিয়া

NewsDetails_01

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় এক সময় ম্যালেরিয়াজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বছরে পাঁচশ’র উপর ছিল। কিন্তু ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গ্রহণের পর এই মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু মারমা।

তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও দেশে ৮০ থেকে ৯০ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতো। কিন্তু ২০১৭ সালে এই রোগে আক্রান্ত হন মাত্র ২৯ হাজার মানুষ। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে। ম্যালেরিয়া নির্ণয়ে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণের ফলে দুর্গম এলাকাগুলোতে মৃত্যুর হার কমেছে বলে দাবি এ কর্মকর্তার।

এদিকে আজ ‘বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে ম্যালেরিয়া নির্মূলে সাফল্য আশাব্যঞ্জক হলেও বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে এখনও ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। দেশে বর্তমানে ২৯ হাজার ২৪৭ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ৯৩ শতাংশই এই তিন জেলার। বিশেষত সীমান্তবর্তী পাহাড়, বেশি বৃষ্টিপাত, বনাঞ্চলবেষ্টিত হওয়া, অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও সেবাদানজনিত সমস্যার কারণে এ ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। এ ছাড়া দেশের ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব রয়েছে।

NewsDetails_03

থানচির রেমাক্রি, ছোট মদক, বড় মদকসহ জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। চিকিৎসা আর যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতায় দূর্গম এলাকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে অনেক বেশি। পার্বত্য জেলার ম্যালেরিয়ার খবর যখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন এই জেলায় চাকরিও করতে চাইতেন না সরকারি-বেসরকারি কর্মচারিরা। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নানা তৎপরতায় সেই চিত্র বদলে গেছে এখন। দুর্গম এলাকায় মাঠকর্মীদের বিচরণ, কীটনাশকযুক্ত মশারির ব্যবহারের কারণেই এখন আর ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর খবর তেমন শোনা যায় না ।

সরকারি তথ্যমতে, ২০১৪ সালে বান্দরবানে ২৪ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন আর মৃত্যু হয় ১২ জনের; ২০১৫ সালে ১৮ হাজার মানুষ আক্রান্ত হলে মারা যান ৩ জন; ২০১৬ সালে ১৪ হাজার আক্রান্ত এবং এই রোগে মারা যান ২ জন। আর ২০১৭ সালে আক্রান্তের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৭৩ জন ও মারা যান একজন। ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত কোনো লোক মারা যায়নি এই রোগে।

ওষুধ বিক্রেতা ভূপাল চন্দ্র দাশ বলেন, আজ থেকে তিন বছর আগেও ম্যালেরিয়া ছিল মহামারি। এমন দিন গেছে ঘণ্টায় একজন ম্যালেরিয়ার রোগী ওষুধ কিনতে আসতেন। দিনে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ম্যালেরিয়ার ওষুধ বিক্রি করতাম। তবে এখন আর তেমন ম্যালেরিয়া রোগীর দেখা মেলে না।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ম্যালেরিয়া নির্মূলে ২০১৭ সালে বান্দরবান জেলায় সরকারিভাবে বিনামূল্যে তিন লাখ মশারি বিতরণ করা হয়। আর এই বছরের চলতি মাস পর্যন্ত ১০ হাজার মশারি বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন