খাগড়াছড়িতে পাহাড় কেটে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে মাটি

NewsDetails_01

খাগড়াছড়িতে পাহাড় কেটে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে মাটি
খাগড়াছড়িতে পাহাড় কেটে ইটভাটায় মাটি নেয়ার ধুম লেগেছে। শুষ্ক সময়ে ভাটা গুলোতে ইট তৈরীর জন্য পাহাড় কাটা ও কৃষির জমির উর্বর মাটি সংগ্রহতে প্রতিযোগীতায় নেমেছে ভাটা মালিকরা। এতে পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি জমিতে ফলন হ্রাসের ঝুঁকি থাকলেও প্রশাসন নিশ্চুপ।
চলতি বছরের জুন মাসে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানী ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় পাহাড় খেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিনে দুপুরে রাস্তার পাশের পাহাড় কেটে ইটভাটা মাটি নেয়া হচ্ছে। গত ১লা নভেম্বর(বুধবার) সরেজমিনে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের চৌংড়াছড়ি এলাকায় পাহাড় কাটার দৃশ্য দেখা যায় মহালছড়ির একটি ইট ভাটায় পাহাড় কেটে মাটি নেয়া হচ্ছে।
ট্রাক্টর শ্রমিক মো: শফি জানান, চৌংড়াছড়ি মগপাড়া থেকে পাহাড় কেটে গত ২৭ অক্টোবর থেকে বিধান দে’র ভাটায় মাটি নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৩-৪টি ট্রাক্টর ভাটায় মাটি ফেলছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন(নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ এ সুপষ্টভাবে পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ করা হলেও প্রশাসনের দৃশ্যমান কোন ভূমিকা না থাকায় আইনের তোয়াক্কা করছেন না ভাটা মালিকরা।
আক্তার উল আলম নামে আরেক ভাটা মালিক জানান, প্রতিটি ভাটা স্থাপনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ। সরকার ভাটা মালিকদের স্বার্থ বিবেচনা না করে আইন করেছে। মাটি না থাকলে ভাটা চলবে কী করে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আমরা যেখান থেকে পাচ্ছি সেখান থেকে মাটি সংগ্রহ করছি।
খাগড়াছড়ির পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ইটভাটা গুলোতে পাহাড় কেটে ও কৃষি জমি থেকে মাটি নেয়া হচ্ছে। অবিলম্বে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা না গেলে ভয়াবহ পরিবেশ ঝুঁকির সম্ভাবনা করেন তিনি।
গত ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ির বিভিন্ন অংশে সড়ক তলিয়ে যায়। সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগ আপতকালীন সড়ক সংস্কার করলেও পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে যেকোন সময় তা আবারও ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে রাঙামাটির সাথে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ আবারও বন্ধ হয়ে যাবে।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, সড়কের পাশের পাহাড় অপরিকল্পিত ভাবে কাটা হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে আবারও ভয়াবহ পাহাড় ধস হয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম জানান, পাহাড় কাটা ও কৃষি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ না করতে ইটভাটা মালিকদের সর্তক করা হয়েছে। কেউ যদি তা অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া পাহাড় কাটার ব্যাপারেও প্রশাসন জিরো ট্রলারেন্স থাকবে। যারা পাহাড় কাটছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলায় ৩২টি ইটভাটা রয়েছে। যার কোনটিই ভাটা স্থাপন আইনের নিয়ম নীতি অনুসরণ করেনি।

আরও পড়ুন