খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষ : আহত ১২

NewsDetails_01

খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষ
খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে শ্রমিকলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে আহত করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার কদমতলীস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বেলা ১১টায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে স্থানীয় সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সমর্থকরা।
মিছিলকারীদের প্রতিহত করতে শাপলা চত্বরের দিক থেকে প্রতিপক্ষ খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের সমর্থকরা পাল্টা আরেকটি মিছিল বের করে আদালত সড়কের দিকে যাওয়ার সময় মাস্টারপাড়া মুখ এলাকায় উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে নেতাকর্মীরা।
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা জানান, শ্রমিক লীগ নেতার ওপর হামলা ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য খগেশ্বর ত্রিপুরা বাড়িতে দূর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করা হলে মেয়র রফিকুল আলমের ক্যাডার বাহিনী দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে এতে ৩ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম দাবি করেন, বিনা উস্কানীতে এমপি গ্রুপের লোকজন তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। হামলাকারীদের আঘাতে ৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এঘটনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি সূত্র। বৈঠকে মেয়র রফিকুল আলম উপস্থিত থাকলেও এমপি গ্রুপের কোন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন সূত্রটি। তবে আরেকটি সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ৭টায় এমপি গ্রুপের লোকজনের সাথে জেলা প্রশাসকের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম সালাহউদ্দিন জানান, আওয়ামীলীগের বিবাদমান দু’টি পক্ষ শহরে বিশৃঙ্খলা করতে চাওয়ায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় উভয় পক্ষের ছোঁড়া ইটপাটকেলে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ৩ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এঘটনায় বিকেল ৫ টা পর্যন্তও কোন মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গঞ্জপাড়া এলাকায় দূর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পৌর শ্রমিক লীগের আহব্বায়ক বেলাল হোসেনকে। এর আগে গত রোববার রাতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য খগেশ্বর ত্রিপুরা বাড়িতে হামলা করে দূর্বৃত্তরা। ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগে বিভাজন সৃষ্টি হয়। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছোট ভাই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী রফিকুল আলমের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিস্কার করা হয় জাহেদুল আলমকে। সে থেকে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগে সভাপতি সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার একটি পক্ষ এবং সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের একটি পক্ষ তৈরী হয়। জাহেদুল আলম পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন তারই ছোট ভাই পৌর মেয়র রফিকুল আলম। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে দুই পক্ষ। দুই বছরে উভয় পক্ষের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে, রয়েছে পাল্টাপাল্টি মামলাও।

আরও পড়ুন