তিনি বিদ্যুৎ দিবেন: তবে টাকা নিয়ে

NewsDetails_01

142262511539ubada copyবান্দরবানের থানচি উপজেলার বলিপাড়াতে সরকারিভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের আগেই ফাঁদ পেতে গ্রাহকদের কাছে নগদ অর্থ আদায় করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)’র এক প্রকৌশলী। অভিযুক্ত প্রকৌশলীর নাম সাইফুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মিটার সংযোগের কথা বলে অন্তত ত্রিশ থেকে চল্লিশটি পরিবার থেকে ছয় হাজার করে অর্থ আদায় করা হয়েছে।
বলিপাড়ার বাসিন্দা রাম্বো ত্রিপুরা অভিযোগ করে বলেন, তাদেরকে সবার আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে বলে জানিয়ে অংচিংমং মারমাকে দিয়ে প্রায় ত্রিশ থেকে চল্লিশটি পরিবার থেকে ছয় হাজার টাকা করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই প্রকৌশলী।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে বলিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আক্তার হোসেন জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বাদ দেন, বলিপাড়াতে এখনো গ্রাম পর্যায়ে বিদ্যুতের খাম্বাও আসেনি, অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু প্রকৌশলীরা বিদ্যুৎ ও মিটার সংযোগ দেবার কথা বলে অবৈধভাবে নগদ অর্থ আদায় করছেন।
বলিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়া অং মারমা বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের আগেই মিটার ও বিদ্যুৎ সংযোগের নামে অনেক সহজ-সরল পাহাড়ি পরিবার থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়া গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা ও চরম দুর্নীতি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আদিবাসীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার কাজে ব্যবহার করেছেন বলিপাড়ার ডাকছৈঃ পাড়ার বাসিন্দা অংচিংমং মারমা (জয়) নামে আরেক আদিবাসী যুবককে। অংচিংমং মারমাকে বিদ্যুৎ বিভাগের বলিপাড়া সাবষ্টেশনে অস্থায়ী কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ দেবার কথা বলে তার মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের কথিত অস্থায়ী কর্মচারী অংচিংমং মারমা জয় বলেন, প্রকৌশলী সাইফুল স্যারের নির্দেশেই ত্রিশটি পরিবার থেকে টাকাগুলো আদায় করা হয়েছিল। তিনি ওই প্রকৌশলী’র আদেশ অমান্য করলে চাকুরী হারাতে হবে বলেও জানান।
আরো জানা গেছে,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির আন্তরিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার পর এই প্রথম উপজেলাটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্দ্যেগ গ্রহন করে বর্তমান সরকার। জেলার প্রত্যান্ত এলাকা বলিপাড়া, যেখানে সহজ-সরল জুমচাষি আদিবাসীদের বসবাস। আর আদিবাসীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ঘরে বিদ্যুৎতের আলো সরবরাহ করা হবে বলে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলিপাড়ার ত্রিশটি পরিবার থেকে এক মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ ও মিটার সংযোগের জন্য ছয় হাজার টাকা করে অর্থ গ্রহণ করার কথা স্বীকার করেছেন।
বান্দরবান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল কাদের গণি বলেন, সংযোগ পেতে গ্রাহকরা কোন কর্মকর্তাকে নগদ অর্থ দিলে তা পিডিবি কর্তৃপক্ষ দায়ি থাকবেনা। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে পিডিবি’র দপ্তরে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করছে, দুর্নীতিবাজ ও প্রতারক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করা না হলে, থানচিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হলে পিডিপির অন্য কর্মীরা দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তে পারে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে নগদ অর্থ লেনদেন করা যাবেনা। জানতে পারছি বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার কথা বলে পিডিবি’র কেউ নগদ অর্থ আদায় করেছেন। দায়ি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের উচ্চ পর্যায়ে সুপারিশ করা হবে।

আরও পড়ুন