চার বছর পূর্বে শুরু করেছিলেন সেলাই মেশিনের কাজ। স্বামী মানসিক রোগী হওয়ায় তখন নিজেই জানতেন না এই কাজ করে সংসারে স্বচ্ছলতা আনা যাবে। তারপর জীবন যুদ্ধ থেমে থাকেনি। ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি অনেকটাই স্বাবলম্বী বলে জানালেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দক্ষিন বাইশারী গ্রামের বাসিন্দা সাদেকা খানম। প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় হয় তার। এখন কেবল তার সংসার নয় বরং তার আপশাপাশের এক গ্রামে সেলাই মেশিন চালিয়ে স্বচ্ছলতা এসেছে অর্ধশতাধিক পরিবারের।
সেলাইয়ের কাজ করার সময় কথা হয় একই এলাকার জাহেদার সাথে। তিনি বলেন, স্বামী বাক-প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিগত ৩ বছর পূর্বে পালিত হাঁস-মুরগি বিক্রি করে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করি। এখন আমার তিন ছেলে-মেয়ে সহ বাক-প্রতিবন্ধী স্বামীর সংসার নিয়ে খুব সুখেই আছি এবং সেলাই মেশিনে কাজ করে বছরে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, তার কাছ থেকে সেলাইয়ের প্রশিক্ষন নিয়ে অনেক হতদরিদ্র নারীরা আজ স্বাবলম্বীর পথে।
বিগত সময়ে পরিষদ থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে সেলাই শুরু করা জুলেখা বেগম বলেন, বিগত ৬ বছর পূর্বে স্বামী দেয়াল চাপায় মৃত্যুবরন করলে দুই ছেলে সন্তান নিয়ে প্রথমে অসহায় জীবনযাপন করলেও পরিষদ থেকে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষন নেওয়ার পর প্রদত্ব সেলাই মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচও উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
স্থানীয় নাইছাফে মার্মার সাথে কথা হলে তিনি জানান, অসহায় পিতা-মাতার সন্তান হওয়ায় টাকার অভাবে যখন পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা, সেলাই প্রশিক্ষন গ্রহন করে স্বল্প পুঁজি নিয়ে বাজারে কাপড় সেলাইয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে আমি সহ আমার পরিবার অনেকটাই স্বাবলম্বী।
বর্তমানে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অবহেলিত শত শত হত-দরিদ্র পাহাড়ী-বাঙ্গালী নারীরা বিভিন্ন ভাবে সেলাইয়ের উপর প্রশিক্ষন নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন এবং নিজেকে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এলাকায় দুস্থ-অসহায় মহিলাদের কর্মসংস্থানের আওতায় আনার জন্য সেলাই প্রশিক্ষন দেওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত সেলাই মেশিন বিতরণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।