রুমায় তামাক চাষের পরিবর্তে শাকসব্জি চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

NewsDetails_01

তামাক চাষ ছেড়ে শাকসব্জি চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। এর মধ্যে সাফল্যে আলোর মুখও দেখছেন কৃষক। হাইব্রীড বেগুন ও শাক সব্জি চাষের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে অধিক লাভজনক মনে করেন তারা । তবে অধিক সাফল্য পেতে সহজ শর্তে পর্যাপ্ত কৃষি ঋণের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

এক কৃষকের নাম আব্দুল হক(৪৫)। বান্দরবানে রুমা উপজেলায় সদর ইউনিয়নের খক্ষ্যংঝিরি বাজার সংলগ্নে তাঁর খামার বাড়ি। আট সদস্যের যৌথ পরিবার আব্দুল হকের নিজস্ব কোনো জমি নেই। তবে গত সাত বছর ধরে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তামাক চাষ করে আসছিলেন তিনি।
রোববার(২২অক্টোবর) বিকালে খক্ষ্যংঝিরি বাজার সংলগ্ন কৃষকের খামারে এপ্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে কৃষক আব্দুল হকের সাথে এসব কথা হয়।

পাহাড়বার্তা‘কে আব্দুল হক বলেন তামাক চাষের পরিবর্তে এবার দেড় কানি জমিতে হাইব্রীড ও বিটি বেগুন চাষ করেছেন। চারা রোপন করে দুই মাসের মাথায় ক্ষেত থেকে বেগুন তোলা যায়। সেপ্টেম্বর মাসে মাঝামাঝি মণপ্রতি ছয়শ টাকায় ছয়মণ করে দুইবার বিক্রি করেছেন বেগুন। তৃতীয়বারে বিক্রি করেন ১২মণ। আর গত শনিবার(২০অক্টোবর) সাড়ে তিন মণ। শেষে দুইবার বিক্রি করেন প্রতিমণে ১২শত টাকায়। পরিশ্রম করে ক্ষেতে উৎপাদিত বেগুন যতবারই জেলা সদর বান্দরবানে পাইকারী সবজি ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে আসেন তিনি। বেগুন বিক্রিতে শেষে দুইবার দাম পাওয়ায় তাঁর মনে আনন্দ লাগার কথা জানালেন কৃষক আব্দুল হক।

পাহাড়বার্তা‘কে আব্দুল হক অরো বলেন হাইব্রীড হলেও আরো দুইমাস বিক্রি করা যাবে। পরিমাণেও বেশি উৎপাদন হবে বেগুন। তখন বিক্রি করা যাবে সপ্তাহ দু‘বার। ওই সময় দাম না কমলে আয় আসবে ৫০-৬০হাজার টাকা। এতে খরচাদি বাদ দিয়েও কমপক্ষে ৩০হাজার লাভ থাকতে পারে। তবে সে সময় বেগুনের দাম কমবে কি, বাড়বে তা নিয়েও চিন্তিত এ কৃষক।
এক প্রশ্নে কৃষক আব্দুল হক জানায় কৃষি কাজের জন্য ব্যাংকে ঋণ কয়েকবার চেয়েছি। আমাকে কৃষি ঋণ দেয়নি কোনো ব্যাংক।

NewsDetails_03

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় এ উপজেলায় দুই শতাধিক কৃষক ক্ষেতে সবজি চাষের সাথে জড়িত। শীতকালীন ও বারোমাসি তিনশত ৫০হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্য মাত্রা ছিল। যা বছরে উৎপাদন হবে প্রায় নয়শত মেট্রিক টন শাকসব্জি। তার মধ্যে বেগুন চাষের সাথে জড়িত কৃষকের সংখ্যা ১০শতাংশ হবে।

পাহাড়বার্তা‘কে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন আগের অধিকাংশ কৃষক তামাক চাষে সম্পৃক্ত ছিল। তবে কৃষি বিভাগ তামাক চাষের ক্ষতি দিকটা তুলে শাক সব্জি ও অন্যান্য চাষের ব্যাপারে কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছেন মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা। ফলে আগের চেয়ে এসময়ে ক্ষেতে খামারে কৃষেকেরা তামাক ছেড়ে সবজি চাষের দিকে ঝুকঁছে ক্ষেতে কৃষকেরা।

এদিকে রুমা সদর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য কৃষক লাললুংথাং বম বলেন চাষি বা কৃষক হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে কৃষি ঋণের সুবিধা নেই। তাই ক্ষেতে খামারে কৃষকেরা আর্থিক সামর্থ্য নাথাকায় লাভজনক চাষ করতে পারছে না।

নিজ ক্ষেতে বিভিন্ন সবজি চাষের কথা উল্লেখ করে পাইন্দু ইউনিয়নের আরেক সাবেক সদস্য চথোয়াইপ্রু মারমা বলেন কৃষকেরা কালক্রমানুসারে লাভজনক কৃষি কাজ করতে পারে, তার জন্য কৃষি ঋণের শর্তগুলো সহজি করা দরকার। কেননা, কৃষি কাজ শুধু মাত্র কৃষকের নয়। কৃষকেরা ক্ষেতে খামারে পরিশ্রমের মাধ্যমে শাক সবজি সহ বিভিন্ন ফলন উৎপাদন করে সব শ্রেণি লোকের চাহিদা মেটাচ্ছেন।

আরও পড়ুন