বান্দরবানে পূরবী কোচের ড্রাইভার কর্তৃক পর্যটক নির্যাতনের শিকার

NewsDetails_01

যত্রতত্র যাত্রী উঠানোর প্রতিবাদ করায় বান্দরবানে পূরবী চেয়ারকোচের ভেতরেই পর্যটকদের পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পূরবী চেয়ার কোচের চালক সাজেদুল ইসলাম মুন্সি’র বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার সকালে বান্দরবান বাস ষ্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। সকাল সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে পূরবী চেয়ার কোচ নং- ঢাকা মেট্রো ব-০২-০০২৩ গাড়িটি সকাল ১০টায় বান্দরবান বাস ষ্টেশনে পৌঁছামাত্র চালক মুন্সি পর্যটকদের গাড়ীর ভেতরে আটকে রেখে গাছের লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। এতে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজের বিবিএ’র ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী জিসান ও রায়হানসহ কয়েকজন মারাত্মক জখম হয়। চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানে যততত্র যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় তাদের মারধর করা হয়। স্থানীয়রা আরো জানান,

বান্দরবানের পূরবী চেয়ারকোচের মান আগের মত নেই, দিন দিন কমছে সেবার পরিধি। যাত্রা পথে প্রায় সময় গাড়ী গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া পাহাড়ী সড়কে গাড়ী উঠার সময়, গাড়ী সামনে না গিয়ে পিছনের দিকে চলে আসে, ফলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার আশংখা মাথায় নিয়ে যাত্রীরা চলাচল করে।

এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার জিসান জানান, নারীসহ তারা ৬জন বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসার জন্য পূরবীতে উঠে। প্রথমে তাদেরকে পূরবীকে বিরতিহীন বলা হলেও কিছুদূর যাওয়ার পরপর চালক ও হেলপার যাত্রী উঠানামা করছিল। এতে তারা প্রতিবাদ করলে চালক বান্দরবান ষ্টেশনে গাড়ী থামানোর সাথে সাথে গাছের লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে।

বান্দরবান বাস ষ্টেশন
বান্দরবান বাস ষ্টেশন
গতবছর বান্দরবানের পূরবী এবং পূর্বাণীর ভাড়া ছিল ১শ টাকা কিন্তু ক্লোজ ডোর সার্ভিস চালুর নামে ১০টাকা করে ভাড়া বাড়িয়ে করা হয় ১১০টাকা। তখন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দাবী করা হয় কোন যাত্রী পথে উঠানো হবেনা, কিন্তু পথে যাত্রী উঠানো এবং চলতি বছর জ্বালানী তেলে দাম কমার পরও ভাড়া কমানোর ব্যাপারে কোন রকম পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বান্দরবান থেকে কোন যাত্রী চট্টগ্রামের পটিয়া যেতে চাইলে তাকে চট্টগ্রামের টিকেট কেটে পটিয়া যেতে হয়, এমন অভিযোগ যাত্রীদের। দেশের কোন পরিবহন সংস্থায় যাত্রীদের লাগেজসহ মালামাল পরিবহনে ভাড়া নেওয়ার রেয়াজ না থাকলেও জেলার এই দুটি পরিবহণে লাগেজের জন্য ১শ থেকে দেড়শ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। বান্দরবানের যাত্রী জমিরুল ইসলাম সজীব বলেন,

NewsDetails_03

এভাবে আর কতদিন,জেলায় প্রতিযোগিতা মূলক পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আমরা ওদের কাছে জিন্মি।

আরো জানা গেছে, পূরবী- পূর্বাণীর মালিকরা বান্দরবানের সড়কটি দখল করে রেখেছেন। একসময় এস আলম মিনিবাস বান্দরবান-চট্টগ্রাম সার্ভিস দিতে চেষ্টা করলে পূরবী এবং পূর্বাণীর কর্তৃপক্ষ গতিরোধ করে তাদের বিতারিত করে। পরবর্তীতে সৌদিয়া মিনিবাস প্রবেশ করলে তাদেরকেও নানা ভাবে জেলা থেকে বিতারিত করে। সর্বশেষ বিআরটিসি প্রবেশ করেও রেহাই পায়নি। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে বান্দরবানে পর্যটকরা ভ্রমনে আসা থেকে বিরত থাকতে পারে এমন মত অনেকের। গতবুধবারও নেপালের আটজন বিদেশী পর্যটকের সঙ্গেও দূর ব্যবহার করে পূরবী-পূর্বাণীর বাস সার্ভিসের শ্রমিকেরা। নেপালী পর্যটক ললিথ ভান্ডারী ও সিবানী বলেন,

বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে তারা মুগ্ধ কিন্তু যাবার বেলায় পূরবী বাস সার্ভিসের শ্রমিকরা টিকেটের বাহিরে প্রতিটি লেগেজের জন্য একশ টাকা করে দাবী করে।

এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন,বান্দরবানে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন কিন্তু এভাবে মারধর করা ঠিক নয়, অবশ্যই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একের পর এক এভাবে পর্যটকদের উপর হামলা চালালে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাবার আশংকা করছে স্থানীয়রা। এছাড়া শুধু পর্যটকরাই নয়, পূরবী পর্বাণীর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে চায় বান্দরবানবাসী।

আরও পড়ুন