বর্গা শিক্ষক দিয়ে চলে বান্দরবানে যে সরকারি স্কুল

NewsDetails_01

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত রামথুই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একজন বর্গা শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রামথুই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ১ জন, সহকারী শিক্ষক ১ জন এবং খন্ডকালীন শিক্ষক রয়েছে ১ জন। কিন্তু কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকে সামান্য বেতনে রাখা একজন বর্গা শিক্ষক বর্তমানে স্কুলটি চালাচ্ছেন।
শিক্ষকদের ক্রামাগত অনুপস্থিতির বিষয় নিয়ে গত ১৯ মে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিবাবক ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি আলোচ্য বিষয়ে উঠে আসে।
আরো জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবনের কথা তুলে ধরে বিষয়টি লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন স্থানীয়রা। বিগত ২ মাসেও কোন প্রতিকার না পেয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সম্প্রতিক সময়ে ফের লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
এই ব্যাপারে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ময়ই থিং এর সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে এই শিক্ষকের নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগে আরো জানা যায়,বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি পদে মং ফো চিং মারমা দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এসএমসি’র কমিটি কখন করা হয় সে বিষয়ে কমিটির বাকী সদস্যরা কোন কিছু জানেন না। একদিকে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সভাপতিকে ডেকে নামমাত্র কমিটি গঠন করে স্কুলটি পরিচালনা করে আসছেন। ফলে আদিবাসী অধ্যুষিত রামথুই পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের মান দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে।
ত্রিশ ডেবা পাড়ার বাসিন্দা মং খিং মারমা জানান, শিক্ষকদের কারণে স্কুলটি ধ্বংস হওয়ার পথে, স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও অনেক সময় তা সময় মতো নামানো কেউ থাকেনা।
লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ও অনিয়মের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। এতে প্রাইমারির গন্ডি পার হওয়ার আগেই ঝরে পড়েছে শিশুরা। শিক্ষকদের অনিয়মের বিষয়টি দ্রুত সুরাহা না হলে স্থানীয় আদিবাসী শিক্ষার্ত্রীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে পারে। এ বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
লামা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যতিন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের পর আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, তদন্ত্র প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন