অবাধে বালু উত্তোলন : ধসে পড়তে পারে লামার বগাইছড়ি ব্রিজ

NewsDetails_01

অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে ধসে পড়ছে লামার বগাইছড়ি ব্রিজ
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জবর দখল করার উদ্দেশ্যে ব্রিজের সামনের অংশে ব্যারিকেড দিয়ে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন ও অবাধে বালি উত্তোলন করায় বেইজের নিচের মাটি সরে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় বগাইছড়ি খাল থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া চলতি বর্ষা মৌসুমের প্রবল বর্ষণের ফলে ব্রিজের এক পাশের এপ্রোজের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত ব্রিজটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সূত্র আরো জানায়, দুর্গম পাহাড়ি এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে ২০১০ সালে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের উপর ব্রিজটি নির্মাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এ ব্রিজ ওপর দিয়ে ইউনিয়নের ইয়াংছা, বনপুর, সাপেরঘাটা,কালিরঝিরিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণ চলাফেরা করেন। সম্প্রতি জনৈক ব্যক্তি ব্রিজের সামনের অংশকে নিজেদের জায়গা দাবি করে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করেছে। আবার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা এলাকার একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে নিষেধ করার পরেও বালু উত্তোলন বন্ধ করছেনা ওই সিন্ডিকেট। যার কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ব্রিজটি ধসের মুখে। এমনকি যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়ে যোগাযোগ বন্ধসহ বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি টিম ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের উপর নির্মিত ব্রিজ পরিদর্শন করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কিছু গাছের খুঁটি দিয়ে ধস ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। ব্রিজটি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকার প্রায় ১৫ হাজার জনসাধারণের দুর্ভোগের অন্ত থাকবেনা। তাই এখনিই ব্রিজটি রক্ষা অতিব জরুরী হয়ে পড়েছে।
ব্রিজ পরিদর্শন টিমের সদস্য ও সুপারভাইজার প্রশান্ত কুমার ভট্টাচার্য জানান, ব্রিজের সামনের অংশের জায়গা জনৈক ব্যক্তি নিজেদের দাবি করে পানি চলাচলের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। যে কারণে ব্রিজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবার বগাইছড়ি খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকায় আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন ব্রিজটি।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, বগাইছড়ি ব্রিজ রক্ষার জন্য উন্নয়ন বোর্ড চলতি অর্থবছর প্রকল্প গ্রহণ করবে। বগাইছড়ি খালের জায়গা জবর দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে পত্র দিয়ে অনুরোধ করা হবে।

আরও পড়ুন