লামায় জমে উঠেছে মৌচাক নির্বাচন : চেয়ারম্যান পদে দুই শিক্ষকের লড়াই

NewsDetails_01

লামায় মৌচাক নির্বাচনে দুই সভাপতি প্রতিদ্বন্ধি
বান্দরবানের বৃহত্তম সমবায়ী প্রতিষ্টান হিসেবে পরিচিত লামা মৌচাক কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড। সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন চলতি মাসের ২৮ অক্টোবর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্টিত হবে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই ও প্রতীক বরাদ্ধের পর পরই পুরো এলাকা জুঁড়ে বিরাজ করছে নির্বাচনী হাওয়া। উপজেলা ও পাশের চকরিয়া উপজেলার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের প্রতিটি অলিগলিতেও শোভা পাচ্ছে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের নানান রকম পোষ্টার, ফেষ্টুন ও ডিজিটাল ব্যানার। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
কে হতে যাচ্ছেন সমিতির কর্ণধার এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে গুঞ্জন। প্রতিবারের মত এবারো নির্বাচনকে ঘিরে চলছে ভোটার ও স্থানীয়দের মাঝে জল্পনা কল্পনা ও নানামূখী হিসাব নিকাশ। ভোটারদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন নানামুখী কৌশল। ভোটারদের অভিমত, সমিতিতে একক নিয়ন্ত্রন ও সিন্ডিকেট উৎপাটন করার প্রতিশ্রুতি দিবেন যারা, তারাই বিজয়ের হাসি হাসবেন। চেয়ারম্যান পদে আবদুর শুক্কুর ও এএম ইমতিয়াজ এবং সেক্রেটারী পদে মো. হানিফ ও নাজিম উদ্দিনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
স্থানীয়দের মতে, মৌচাক কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের নির্বাচন হল একটি মিনি পার্লামেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচন জাতীয় ও স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনকে হার মানাবে এমনটিই ধারণা অনেকের। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর এ সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২সালে ১২ জন সদস্য নিয়ে এ সমিতির পথচলা শুরু হলেও বর্তমানে সমিতির সদস্য সংখ্যা বেড়ে শিশুসহ ১০ হাজার জন। তম্মধ্যে এবার মোট ভোটার হয়েছেন ৩ হাজার ২৪২জন।
এবারে সমিতির নির্বাচনে ৩টি পদে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন, লামা আর্দশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম.ইমতিয়াজ হারিকেন প্রতীক, লামামুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর শুক্কুর চেয়ার প্রতীক ও সরকারী উচ্চ বিদ্যলয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক নুরুল ইসলাম ফরিদ দোয়াত কলম প্রতীক।
সাধারণ সম্পাদক পদে আনারস মার্কা নিয়ে মো. হানিফ, হাত পাখা শফিউল আলম ও টেলিভিশন প্রতীকে নাজিম উদ্দিন। এছাড়াও ডিরেক্টর পদে থোয়াইনু মার্মা, মো. সুলতান, নুরুজ্জামান, মোজাম্মেল হক ও শওকুতুল ইসলাম প্রতিদন্ধীতা করছেন। এর আগে কোন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় মো. ফরিদুল আলম সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. জাবেদ মীরজাদা নির্বাচন কমিশনার, সমিতির বর্তমান সেক্রেটারী মো. হাবিবুর রহমান ও ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক সুলতান মাহমুদ এরশাদ সহকারী কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
সমিতির অধিকাংশ ভোটার জানায়, সিন্ডিকেট ভেঙ্গে জনগনের কল্যানার্থে যে সকল নেতৃবৃন্দ সমিতির উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত রাখবে এবং সমিতিকে দূর্নীতিমুক্ত সমিতি গঠনে ভূমিকা রাখবে, তাদেরকে ভোট প্রদান করে নেতা নির্বাচিত করা হবে। তারা আরও বলেন, চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারী এ দুটি পদে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
সুত্রে জানান, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে সমিতি পরিচালনা করে আসছে। এতে সদস্যরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই এবারে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ পদে লড়াই হবে দুই হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মধ্যে।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর শুক্কুর বলেন, সমিতির সভ্য (ভোটার), পোষ্য ও অংশীদারদের অকুন্ঠ ভালবাসা ও সমর্থন নিয়ে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি ভোটারেরা আমার কর্মকান্ড বিবেচনা করে নিশ্চয় আমাকে বিজয়ী করবেন। তিনি আরও বলেন, শুরু থেকে সমিতিতে কোন গণতন্ত্র ছিলনা। আল্লাহ আমাকে নির্বাচিত করলে সকল সদস্যদের সমান সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে পুর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দূর্নীতি রোধ করাসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো।
এ পদের আরেক প্রার্থী এএম ইমতিয়াজ জানান, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সহজ শর্তে মানুষকে দারিদ্র বিমোচন করা হবে। আর্থিক অভাবে যারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন না, তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হবে। এছাড়া নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
লামা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও সমিতির নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ মীরজাদা বলেন, নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন