বান্দরবানে মন্দির গড়ে তোলে প্রতিবন্ধী পরিবারের ভূমি দখল

NewsDetails_01

বান্দরবানের বালাঘাটায় প্রতিবন্ধী পরিবারের ভূমি দখল করে গড়ে তোলা মন্দির
বান্দরবান শহরের বালাঘাটা এলাকায় মন্দির গড়ে তোলে এক মানসিক প্রতিবন্ধী পরিবারের ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকার ৩৩৭ নং মৌজার ১৫৯ নং হোল্ডিং এর এক দশমিক ৬৬ একর পাহাড়ি ভূমি ২০০৫ সালে নিহার কান্তি বড়ুয়া ক্রয় করেন এবং ক্রয়ের পর থেকে বোমাং সার্কেলের ভূমি আইন অনুসারে কর পরিষোধ করে আসছে। নিহার প্রয়াত হলে উক্ত ভূমিকে ১৭৬ হোল্ডিং এর ভূমি দাবী করে সর্বজনীন হরি মন্দির নামে মন্দির গড়ে তুলেন ঠিকাদার মলিন কান্তি দাশ। নিহারের সন্তান তিলক বড়ুয়া মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারনে কয়েকবছর আগে এই ঠিকাদার ভূমিটি দখল করে নেয়।
প্রয়াত নিহার বড়ুয়ার কন্যা রুমি বড়ুয়া বলেন, আমার পিতা নেই ভাই মানসিক প্রতিবন্ধী, আর এই সুযোগে আমাদের ভূমিটি দখল করে দখল বজায় রাখতে মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে।
আরো জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নিহার বড়ুয়ার জায়গাটিতে গড়ে তোলা মন্দির ভাংচুর করা হবে বলে উত্তেজনা তৈরী করে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দখলকারী মলিন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা’র নেতৃত্বে একটি দল এবং কেন্দ্রিয় মন্দিরের নেতৃবৃন্ধদের পৃথক দল ঘটনা তদন্ত্র করে। তদন্ত্রের পর তারা মনে করেন, ভূমিটি দখলের জন্য এখানে মন্দির গড়ে তোলা হয়। এটি সর্বজনীন মন্দির নয়, ভূমি দখলের জন্য গড়ে তোলা পারিবারিক মন্দির।
জেলার কেন্দ্রিয় মন্দির কমিঠির যুগ্ন সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর অজিত দাশ বলেন, ভূমি দখলের জন্য মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে, ঠিকাদার মলিন ব্যতিথ হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ এই মন্দিরে প্রার্থনা করতে যায়না।
বান্দরবানের বালাঘাটায় প্রতিবন্ধী পরিবারের ভূমি দখল করে গড়ে তোলা হরি মন্দির
আরো জানা গেছে, ভূমিটির দখল ধরে রাখতে মলিন দাশ দখলকৃত ভূমি থেকে জায়গা দিবে বলে একটি কমিঠি গঠন করে মন্দিরটি গড়ে তোলে। কাগজ অনুসারে ভূমিটির আসল মালিক মলিন না হওয়ার কারনে পরে তিনি মন্দিরের জন্য ভূমি দিতে পারেনি। ফলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় এলাকাটিতে ওঁমকারেশ্বর নামে একটি সর্বজনীন শিব মন্দির নিজেরা গড়ে তুলেন।
ওঁমকারেশ্বর সর্বজনীন শিব মন্দিরের সভাপতি মদন দাশ বলেন, আমাদের মন্দিরটি সর্বজনীন, হরি মন্দিরটি শুধুমাত্র মলিনের পরিবার ব্যবহার করে, মন্দিরটির সাথে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন সম্পর্ক নেই।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত মলিন কান্তি দাশ বলেন, হরি মন্দিরটি থাকলে আমার জায়গা থাকবে, মন্দির না থাকলে আমার জায়গা থাকবেনা।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করছে, এই প্রভাবশালী বিভিন্ন অজুহাতে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করেন, আর এই নিয়ে ক্ষোধ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন অতিষ্ঠ। এই ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্ত্র পূর্বক ভূমিটির প্রকৃত মালিক প্রয়াত নিহারের পরিবারকে ফিরিয়ে দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা বলেন, হিন্দু নেতৃবৃন্ধ ও আমাদের অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি ভূমিটি দখল রাখতেই মন্দিরকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, আমরা সেই হিসাবেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

আরও পড়ুন