আলীকদমে নদীর ভাঙ্গনে নি:স্ব হচ্ছে শতাধিক পরিবার

NewsDetails_01

আলীকদমে নদীর ভাঙ্গন
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় মাতামুহুরী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে নদীর তীরবর্তী এলাকার রাস্তা,ফসলি জমি ও দুই শতাধিক পরিবার এবং ভাঙ্গনের আশংকায় রয়েছে আরো শতাধিক পরিবার ,শতশত একর আবাদি জমি ও চলাচলের সড়ক। বছরের পর বছর ধরে চলা আসা এসব ভাঙ্গনে মানুষ সফলি জমি, বসতবাড়ীসহ সবকিছু হারিয়ে নি:স্ব হলেও নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১ নং আলীকদম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাবের মিয়া পাড়া, ৪ নং ওয়ার্ডের বটতলি পাড়া ও ৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের রোয়াম্ভু বুলু কার্বারী পাড়া প্রায় বিলীন এবং বিলীনের ঝুঁকিতে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার,শত শত একর ফসলি জমি।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলীকদম উপজেলার ১নং আলীকদম ইউনিয়নে সাবের মিয়া পাড়া ও ৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুলু কার্বারী পাড়া দীর্ঘ দশ-বারো বছর ধরে ভাঙ্গন শুরু হলে আজও পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি এবং ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষনিক সামান্য সহায়তায় পেলেও পরবর্তীতে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে কেউ এগিয়ে আসেনি সহায়তার জন্য।
সাবের মিয়া পাড়ার বাসিন্দা ফরিদ আহাম্মদ পাহাড়বার্তাকে বলেন, ১ নং আলীকদম ইউনিয়নে সাবের মিয়া পাড়া হলো সবচেয়ে নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, উক্ত পাড়ার তিন পাশে মাতামুহুরী নদী ও চৈক্ষ্যং নদী থাকায় প্রতিবছর বর্ষাকালে ফসলি জমি বিলীন হতে হতে এখন বসতবাড়ীও বিলীন হচ্ছে। বর্তমানে আব্দুল হামিদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী সড়কের মাঝামাঝি রিদুয়ানের বাড়ীর সামনের চলাচলের সড়কটি সম্পূর্ণ বিলীন এবং ভাঙ্গন হতে মাত্র দুই হাত দুরত্বে রিদুয়ানের বসতবাড়ী ।
তিনি আরো বলেন, অনেকবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বলার পর কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নি। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আলীকদমের বৃহৎ পাড়াটি বিলীন হয়ে যাবে।
রোয়াম্ভু বুলু র্কাবারী পাড়া বাসিন্দা রবিদয় তংচঙ্গ্যা বলেন, আলীকদমের পুরানো ঐতিহ্যবাহী তংচঙ্গ্যা পাড়াটি সম্পূর্ণ বিলীন হওয়ার পথে। এক সময় শতাধিক পরিবারের বসতি থাকলেও বর্তমানে প্রায় আটটির মত পরিবার আছে, সেগুলোও নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারী ভাবে ২০১৩ সালে কুঠি ও ড্রামসেট দিয়ে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করলেও সে বছরই বর্ষাকালে রোয়াম্ভু ছড়া নদীর প্রবল স্রোতে তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। রোয়াম্ভু ছড়া নদী ও মাতামুহুরী নদীর সংযোগস্থলের তীরবর্তী ও নদীর গভীরতা কমে যাওয়া,নদী ও ছড়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে এখন আরো করুণ অবস্থা। অনেকবার পারিবারিকভাবে ও পাড়াবাসীর সহায়তায় ভাঙ্গন রোধ ও নদীর গতিপথ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেও ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছে না। প্রশাসন ও প্রতিনিধির নিকট মৌখিক ও লিখিতভাবে জানালেও আজ পর্যনÍ কোন কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মো : রাকিবুল হাসান পাহাড়বার্তাকে জানান, আলীকদমের ভাঙ্গন বিষয়ে আগে কেউ জানায়নি তাই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয় নি। তিনি আরো জানান. তিনি ভাঙ্গন কবলিতস্থান দ্রুত পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট মহলে কথা বলবেন।

আরও পড়ুন