রাঙামাটির হ্রদে বৈসাবি’র ফুল

NewsDetails_01

ফুলবিজুর দিন ভোরে রাঙামাটির রাজবাড়ির নদীর ঘাটে ফুল ভাসায় পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল দিবস পালিত হবে বৃহস্পতিবার। এ দিন ঘরে ঘরে চাকমারা মূলবিজু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসুকমা নামে পালন করবে উৎসবটিকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়িদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী বৈসাবি।
বুধবার সকাল ৭টায় রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারের ঘাটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ভাসানো হয়েছে। এ সময় রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। এতে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ পাহাড়ি নারী-পুরুষ এতে অংশ নেন। এরপর সকাল ৯টায় শহরের গর্জনতলীতে ফুল ভাসায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ফুল ভাসানোর পর অনুষ্ঠিত হয় নৌকাবাইচ, বয়োজৈষ্ঠদের স্নান, বস্ত্রদান, আলোচনা সভা, ঐতিহ্যবাহী গড়াইয়া নৃত্য ও পিঠা আপ্যায়ন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এ ছাড়া রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, পৌরসভা প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন ও মারমা সংস্কৃতি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মংউচিং মারমা।
এদিকে বৈসাবি ঘিরে পার্বত্য তিন জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। উৎসবে মাতোয়ারা পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব স¤প্রদায়ের নারী-পুরষ। তিন দিনের উৎসব শেষে ১৬ এপ্রিল রাঙামাটি কাউখলাীর বেতবুনিয়া স্কৃল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মারমা স¤প্রদায়ের সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব।
বৈসাবির সঙ্গে একাট্টা আবহমান বাংলার বৈশাখী উৎসব। এ উপলক্ষে রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখী উৎসবের। নববর্ষের পহেলা বৈশাখ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গৃহীত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা। এতে রয়েছে ওইদিন সকালে শহরে আনন্দ শোভাযাত্রা, যেমন খুশি তেমন সাজো, বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পান্থা উৎসব, বিকালে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বলীখেলা, বিনোদনমূলক ক্রীড়ানুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রসঙ্গত, চাকমাদের ভাষায় এ উৎসবকে বিঝু,ত্রিপুরাদের ভাষায় বৈসুক এবং মারমাদের ভাষায় সাংগ্রাই এবং তংচঙ্গ্যাদের ভাষায় বিসু এবং অহমিয়াদের ভাষায় বিহু নামে আখ্যায়িত করা হয়। তিন সম্প্রদায়ের প্রাণের এই উৎসবের নামের আদ্যক্ষর নিয়েই পাহাড়ের আদিবাসীরা এই উৎসবকে বলে ‘বৈসাবি’ উৎসব।

আরও পড়ুন