অনাদী রঞ্জন ও অনল বিকাশ চাকমা’র হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি

NewsDetails_01

সাবেক ইউপি সদস্য অনাদী রঞ্জন চাকমা ও ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর সংগঠক অনল বিকাশ চাকমা প্লুটোর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। ইউপিডিএফ এর প্রচার বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাঙামাটি সদর উপজেলার কুতুকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়েল হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনল বিকাশ চাকমা প্লুটের স্ত্রী আলপনা চাকমা ও অনাদী রঞ্জন চাকমার স্ত্রী মনাদেবী চাকমাসহ দুই পরিবারের ১৫-১৬ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান অনাদী রঞ্জন চাকমার ছেলে রিন্টু চাকমা।

সংবাদ সম্মেলনে অনল বিকাশ চাকমার স্ত্রী আলপনা চাকমা সাংবাদিকদের জানান, ‘যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে তাদের উপযুক্ত বিচার চাই”। তার স্বামীকে কারা খুন করেছে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশেরœ জবাবে আলপনা বলেন, “আমার স্বামী ইউপিডিএফে কাজ করায় প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তপন জ্যোতি চাকমা বর্মার নেতৃত্বে নব্য মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা খুন করেছে”।

NewsDetails_03

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলা হয়, গত ৫ ডিসেম্বর ২০১৭ সাবেক ইউপি সদস্য অনাদী রঞ্জন চাকমাকে তৈচাকমা দজর পাড়া এলাকায় (১৮ মাইল) গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ১০ দিন পর অর্থাৎ গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ বন্দুকভাঙার ধামাইছড়া মোনপাড়া নামক স্থানে ইউপিডিএফ সংগঠক অনল বিকাশ চাকমা প্লুটোকে গুলি করে খুন করা হয়। এই দু’টি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ি হলো বর্মা ও তরুর নেতৃত্বাধীন নব্য মুখোশ বাহিনী নামক সন্ত্রাসীরা। আমরা এই দুই খুনের ঘটনার এবং ৩ জানুয়ারী মিঠুন চাকমা হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

পুলিশ হত্যাকারীদের এখনো গ্রেফতার করেনি অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হায়, ঘটনার পর অনেক দিন হয়ে গেলেও পুলিশ অপরাধীদের এখনো গ্রেফতার করেনি গত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু চাকমার নেতৃত্বে নব্য মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ কমিটি ও নানিয়াচরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। অন্যদিকে সন্ত্রাসীরা খুনের ঘটনার দায় স্বীকার করে বুক ফুলিয়ে বেড়াচ্ছে এবং একের পর এক খুন ও অপরহণসহ নানা ধরনের অপরাধ করে চলেছে। উক্ত স্মারকলিপি প্রদানের পরদিনই তারা বন্দুকভাঙায় ইউপিডিএফ সংগঠক অনল বিকাশ চাকমা প্লুটোকে খুন করে, যা উপরে বলা হয়েছে। এরপর তারা গত ৩ জানুয়ারী ২০১৮ খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের অপর এক সংগঠক মিঠুন চাকমাকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করে।

তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা একজন দাগী আসামী উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নব্য মুখোশ বাহিনীর প্রধান তপন বিকাশ চাকমা ওরফে বর্মা প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে দীর্ঘ দিন ধরে একজন দাগী আসামী ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে কেবলমাত্র নানিয়াচর থানায় খুন ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫টি ফৌজদারী মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে-
ক. অবিলম্বে অনাদী রঞ্জন চাকমা, অনল বিকাশ চাকমা প্লুটো ও মিঠুন চাকমার খুনীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
খ. বর্মা-তরুর নেতৃত্বাধীন নব্য মুখোশ বাহিনী নামক সন্ত্রাসী সংগঠনটি ভেঙে দিতে হবে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে এবং এই সন্ত্রাসীদের ও তাদের গডফাদারদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
গ. ভবিষ্যতে যাতে আর কাউকে অনাদী, প্লূটো ও মিঠুনের মতো অকালে প্রাণ হারাতে না হয় এবং আর কোন পরিবারকে আমাদের মতো ভাগ্য বরণ করতে না হয়, তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আরও পড়ুন