রাঙামাটি জেলার মধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগামী এই উপজেলায় রয়েছে আলাদা সুনাম। বিশেষ করে সাংস্কৃতি এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে এখানকার শিল্পী এবং ক্রীড়াবিদরা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এখানকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিল্পীদের বৈচিত্রময় সংস্কৃতি ইতিমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে সমাদৃত হয়েছে। তাই উপজেলার সাংস্কৃতি কর্মকান্ডকে বেগবান করার লক্ষে এখানে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মানের দাবি উঠেছে।
রাঙামাটির বেতার শিল্পী কাপ্তাই এর জ্যাকলিন তংচংগ্যা, রোজি মার্মা এবং সুমনা তংচংগ্যা জানান, কাপ্তাইয়ে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মান করে এখানকার শিল্পীদেরকে উন্নতর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হলে এই অঞ্চলের শিল্পীরা আরোও বেশী সমৃদ্ধ হবে।
কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফনিন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং যুগ্ম সম্পাদক ঝুলন দত্ত জানান,রাঙামাটির মধ্যে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কাপ্তাই এর রয়েছে আলাদা সুনাম, তাই এখানে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মানের দাবি এখন অনেক যুক্তিসংগত।
কাপ্তাই উপজেলা আ’লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইচাইন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক রাংগামাটি জেলা পরিষদ সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মার্মা জানান বর্তমান জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাংস্কৃতি বান্ধব সরকার,তাই তারা এই উপজেলায় একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শাখা নির্মানের জন্য সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিকট আবেদন জানান।সূত্র জানায়,কাপ্তাইয়ের কয়েকটি এলাকার জায়গা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মানের জন্য পছন্দ করা হয়েছে,তাই স্থানীয়রা আশা করছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই উপজেলায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মান করে সংস্কৃতি কর্মকান্ডকে আরোও গতিশীল করবেন।
রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমা জানান, কাপ্তাই উপজেলায় একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মানের জন্য গত ২ বছর আগে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় হতে সম্ভাব্য জায়গার তালিকা প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়,কিন্ত প্রয়োজন মতো জায়গা না পাওয়ায় এতদিন এই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করা হয় নাই। তিনি আরো জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদের সদস্য সান্তনা চাকমা এবং ইনষ্টিটিউটের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মৃত্তিকা চাকমা ও স্বপন কুমার ত্রিপুরা সহ তিনি কাপ্তাই এর ওয়াগ্গা এলাকায় কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করেন।
রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য কাপ্তাই এর অদিবাসী সান্তনা চাকমা জানান, তিনি ইতিমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের নিকট কাপ্তাই এ একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট নির্মানের জন্য চিঠি লিখেছেন।
আরো জানা গেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় এর আগে অনেক জায়গা দেখানো হলেও অবকাঠামোগত কারনে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মান করা সম্ভব হয়নি।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি তারিকুল আলম জানান, কাপ্তাই সাংস্কৃতি ক্ষেত্রে রজেলার মধ্যে সবসময় শীর্ষ স্থান দখল করে থাকে,এখানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ণিল নাচ,গান সবসময় দেশী বিদেশী দর্শক স্রোতাদের কাছে আর্কষনীয় হয়ে থাকে,তাই কাপ্তাই এ একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মান হলে এখানকার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড আরোও বেগবান হবে। এই ব্যাপারে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সব ধরনের সহোযোগীতা করা হবে।
কাপ্তাই এর সকল সংস্কৃতি কর্মী এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এখানে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মান করে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরী করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
