শিখা নিভে যায় নিজে থেকে

NewsDetails_01

homeআজকে আমরা মজার একটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করবো। একটা মোমবাতির শিখাকে বাতাস ছাড়াই নিভিয়ে দিবো। আমরা শিখায় কোনো ফু দিবো না এবং সামনে কোনো বাতাসের ঝাপটাও আসবে না। তবুও শিখাটি নিভে যাবে। চাইলে তোমরা এটিকে বিজ্ঞানের ম্যাজিক বা শুধু ম্যাজিকের মতো করেও দেখাতে পারো। তবে যদি বিজ্ঞানের ম্যাজিক দেখাও তবে দেখানোর পরে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাটুকু তুলে ধরতে ভুলো না যেন। বিজ্ঞানকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং বিজ্ঞান শিখতে সবার আগ্রহ গড়ে তোমার জন্য এই ব্যাখ্যাটুকু খুবই জরুরী।
আমাদের যা যা লাগবে—
১। ভিনেগার ২। বেকিং সোডা ৩। কাঁচের গ্লাস ৪। মোমবাতি ৫। দেশলাই
যেভাবে করব—
আমাদের এই কাজের সবচেয়ে জরুরি উপকরণ দুটি হচ্ছে, ভিনেগার এবং বেকিং সোডা। এই দুইটিই খুব সহজেই বাসার রান্নাঘরে পেয়ে যাবে। একটা কাচের গ্লাসে খানিকটা ভিনেগার নিবো। ভিনেগারের পরিমাণ গ্লাসের মোট অংশের পাঁচ ভাগের এক ভাগের সমান হবে। কাচের গ্লাস নেওয়ার একটা বিশেষ কারণ হচ্ছে কাচ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। যেহেতু এখানে রাসায়নিক পরিবর্তন হবে তাই নিরপেক্ষ পাত্র নেওয়া সবদিক দিয়ে সুবিধাজনক। গ্লাসে ভিনেগার নিয়েই মোমবাতিটির শিখা জ্বালিয়ে নিবো। এরপরে গ্লাসের ভিনেগারে এক মুঠো বেকিং পাউডার দিবো। দেখা যাবে যে ভিনেগার এবং বেকিং পাউডারের বিক্রিয়ায় গ্লাসের ভিতরে ফেনা হয়ে উপর দিকে উঠে আসছে। যেমনটা গ্লাসে কোক পেপসির মতো কার্বনেটেড ড্রিংকস ঢাললে হয়। বেকিং পাউডার দিয়ে গ্লাসটি হাত দিয়ে চাপা দিয়ে রাখতে রাখবো। এরপর গ্লাসটা অল্প একটু কাত করে শিখার সামনে নিলেই কোনো বাতাসের ঝাপটা ছাড়াই মোমবাতিটির শিখাটি ধপ করে নিভে যাবে।

NewsDetails_03

কেন এমন হল?
বিজ্ঞানের ম্যাজিক এবং অন্য ম্যাজিকের পার্থক্যই হচ্ছে এদের ব্যাখ্যায়। এমনিতে বেশিরভাগ ম্যাজিকই চোখের ধাঁধাঁ। কিন্তু বিজ্ঞানের ম্যাজিকের একটা বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যা থাকে যেটা থেকে আমরা বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারি। আমাদের এই পরীক্ষার ব্যাখ্যাটি বেশ সরল। এখানে আমরা বেকিং পাউডার এবং ভিনেগারের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটিয়েছি। বেকিং পাউডার হচ্ছে সোডিয়াম বাই কার্বনেট এর রাসায়নিক সংকেত NaHCO3 তোমরা যারা এখনও রাসায়নিক সংকেত পড়তে বা বুঝতে শিখোনি তাদের সহজভাবে বুঝানোর জন্য বাল যেতে পারে, বেকিং সোডাতে সোডিয়াম হাইড্রোজেন কার্বন এবং অক্সিজেন মিলে একটা যৌগ গঠন করে। অপরদিকে ভিনেগার হচ্ছে একটি এসিড। এর রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে HCH3COO অর্থাৎ ভিনেগার হাইড্রোজেন কার্বন এবং অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌগ। এই দুই যৌগ নিজেদের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটায় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করে। আমরা যখন মোমবাতির শিখাতে ফু দেই তখনও আমরা এই কাজটাই করি। আগুনে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস দেই। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের ধর্ম হচ্ছে সে নিজে জ্বলে না এবং আগুনকেও জ্বলতে দেয় না।
আমরা যখন ভিনেগার এবং বেকিং পাউডারকে মিলিয়েছিলাম তখন বুদবুদ আকারে কার্বনডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়েছিল। সেই গ্যাসকে আমরা আবার হাত দিয়ে বের হতে বাধা দিয়েছিলাম। এরপরে যখন আগুনের সামনে গ্লাসকে কাত করে হাত সরিয়ে নিয়েছি সেই গ্যাস আগুনের শিখাকে নিভিয়ে দিয়েছে। দেখেছো কী সহজে বিজ্ঞানের একটা মজার বিষয় আজ আমরা শিখে ফেললাম! সূত্র : বিডিনিউজ

আরও পড়ুন