খাগড়াছড়ির আদালতের কার্যক্রম চলছে পরিত্যক্ত ভবনে

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার বছর আগে খাগড়াছড়ির মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলে ভূমি জটিলতায় মুখ থুবড়ে আছে ভবন নির্মাণ কাজ। গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যক্ত একটি ভবন ও টিন শেড ভবনে চলছে বিচারিক আদালতের কার্যক্রম। ভবন ও বসার ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কার্যক্রম। বিচারক ও লোকবলের সংকট থাকায় বিলম্বিত হচ্ছে বিচারিক কার্যক্রম।
আদালতের দাপ্তরিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পর খাগড়াছড়িতে চালু হয় মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম। অবকাঠামোগত ব্যবস্থা না থাকায় শুরু থেকে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে ভাড়ায় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা হতো। ওই ভবনের সম্প্রসারণ কার্যক্রম শুরু হওয়ায় পাশের একটি ভবনে স্থানরিত হতে হয়। যেটি গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যক্ত একটি ভবন। পরিত্যক্ত ভবন ও টিন শেডের তৈরী একটি ভবনে চলছে বিচারিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। এছাড়া ৯জন বিচারকের বিপরীতে আছেন মাত্র ৪ জন, ৭৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আছে ৪৫ জন। সরেজমিনে দেখা যায়, মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস করছেন টিন শেড একটি ভবনে। ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে অর্ধশতাধিক বিচার প্রার্থী ও স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। এজলাস ও বিচারকের বসার ঘরও পৃথক ভবনে।
বিচার প্রার্থী সালেহা বেগম জানান, মামলার হাজিরা থাকায় সকাল থেকে কোর্ট প্রাঙ্গণে। মামলার কার্যক্রম শুরু হবে বেলা ২টায়। বসার ছাউনী না থাকায় খোলা আকাশের নিচে বসে আছি। রোদে খুব কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট হলেও তো থাকতে হবে।
আরেক প্রার্থী রাজেশ চাকমা জানান, খাগড়াছড়ির মানুষ সব দিকে বঞ্চিত। বিচার বিভাগেও তারা বঞ্ছনার শিকার। রৌদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের আদালতে থাকতে হয়। তার উপর বিচারক সংকট থাকায় মামলার তারিখ অনেক বিলম্বে হয়।আদালতের এক অফিস সহকারী নাম না প্রকাশের অনুরোধে জানান, পরিত্যক্ত ভবনে অফিস করতে ভয় লাগে। গত কয়েকদিন আগে অফিসের ভেতর সাপ ঢুকে গেছে। এছাড়া টিন শেড ভবনে যারা অফিস করেন গ্রীষ্মকালের তাদের খুব কষ্ট হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আশুতোষ চাকমা জানান, মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের ভবন না থাকায় বিচারপ্রার্থীদের খুব অসুবিধা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভবন নির্মিত হলেও ভিত্তিপ্রস্তরের ৪ বছর পরও খাগড়াছড়ির ভবনটি তৈরী না হওয়া দু:খজনক। খাগড়াছড়িবাসীর কষ্টলাগবে দ্রæত ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু ও প্রয়োজনীয় লোকবল পদায়নে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোকাম্মেল হোসেন জানান, ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাগড়াছড়ির মূখ্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দীর্ঘ চারবছরেও ভবন নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় বিচারিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ৯জন বিচারকের মধ্যে ৫ জন বিচারকই নাই। এছাড়া অধিকাংশ পদে শুন্যপদ রয়েছে ৩৪টি।
খাগড়াছড়ি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান জানান, ২০১৩ সালে ভূমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেয়া হয়। জেলা প্রশাসন এখনও ভূমি অধিগ্রহণ করে না দেয়ায় ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন