খাগড়াছড়িতে প্রাইভেট ক্লিনিকের বিরুদ্ধে রক্তদাতার রক্ত বিক্রির অভিযোগ

NewsDetails_01

খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন রোগীর জন্য দেয়া স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের রক্ত নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে প্রাইভেট ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার রাতে খাগড়াছড়ি শহরের নারিকেল বাগান এলাকার চেঙ্গী কাঁশবন হাসপাতালে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা ও রোগীর স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
স্বেচ্ছায় রক্তদাতা শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় এক রোগীর অপরেশনের জন্য “ও” পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন শুনে রক্ত দিতে চেঙ্গী কাঁশবনে আসি। রক্ত নেয়ার শেষ পর্যায়ে নার্সের কাছ থেকে জানতে পারি রক্তের প্রয়োজন নেই। তখন আমার রক্ত কি করা হবে জানতে চাইলে নার্স জানায় ফ্রিজে রেখে দেয়া হবে। তখন আমার অনেক কষ্ট লেগেছে।
মেহেদী হাসান নামে আরেক রক্ত দাতা অভিযোগ করেন, প্রায় সময় চেঙ্গী কাঁশবন হাসপাতালের বিরুদ্ধে রক্ত কেলেঙ্কির অভিযোগ। শফিকুল ইসলাম নামে একজনের সাথে আবারও এমন ঘটনা হয়েছে জানতে পেরে আমরা হাসপাতালে এসেছি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
জাকারিয়া নামে আরেকজন জানান, ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর একজনকে রক্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে রক্ত আমি যে রোগীকে দিয়েছি সে রোগীকে না দিয়ে ফ্রিজে রেখে দেয় এবং ১ ডিসেম্বর আরেক রোগীর কাছে এটি বিক্রী করে। বিষয়টি আমি জানতে পারার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করলে তারা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এবারও একই কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
শিবলু নামে রোগীর এক স্বজন জানান, কয়েক মাস আগে চেঙ্গী কাঁশবনে তার এক আত্মীয়ের অপরেশন হয়। তখন রক্তের প্রয়োজন পড়লে ক্লিনিকের স্টাফরা ১৫০০ টাকার বিনিময়ে এক ব্যাগ রক্ত দেয়।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা: শওকত হোসেন মুঠোফোনে বলেন, খাগড়াছড়ি জেলার কোন ক্লিনিকে রক্ত সংরক্ষণের অনুমতি নাই।
তাহলে কার অনুমতিতে প্রাইভেট এই ক্লিনিকে রক্ত সংরক্ষণ ও বিক্রী করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই বলে স্বীকার করলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: টুটুল চাকমা, কর্তব্যরত চিকিৎসক।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: দিব্য শেখর চাকমা বলেন, স্টাফদের ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফ্রিজে রক্ত সংরক্ষণের বিষয়টি প্রথমে এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে স্বীকার করেন তিনি।
খাগড়াছড়ি ব্লাড ডোনারস এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মো: কায়েস বলেন, মানব সেবার এই পেশাকে যারা ব্যবসায় পরিণত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অভিযোগ করা হবে।

আরও পড়ুন