আ.লীগের সম্মেলন: পুরনোরাই থাকছেন নতুন কমিটিতে

NewsDetails_01

alক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২/২৩ অক্টোবর। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ গঠন করা হয়। সাধারণত সম্মেলন মানে নতুন কমিটি, নতুন নেতা নির্বাচন। তবে এবার অধিকাংশ পুরনো নেতৃত্বই থাকবে নতুন কার্যনির্বাহী সংসদে। খুব বেশি হেরফের হচ্ছে না আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা বলেন, ‘কমিটির আকার বাড়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছু নতুন মুখ আসতে পারে। এছাড়া দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্র সংশোধন এবং সংযোজন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, কমিটি কেন্দ্রিক নতুন কোনও চমক এবারের সম্মেলনে থাকবে না। কিছু নতুন পদ সৃষ্টি হলে নতুন কিছু মুখ আসবে কমিটিতে। এছাড়া পুরনো নেতারাই বেশির ভাগ থাকবেন।’
সূত্র জানায়, এবার সাধারণ সম্পাদক পদটিও অনেকটা নিশ্চিত হয়ে রয়েছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জন্যই।
দলটির নীতি-নির্ধারকরা জানান, ‘বর্তমান কমিটিতে কয়েকটি শূন্য পদ সৃষ্টি হয়েছে। এ পদে কাউকে টানা হতে পারে, আবার কিছু নতুন পদ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে কিছু নতুন মুখ আসতে পারে। এছাড়া বর্তমানে কমিটিতে রয়েছেন, এমন নেতাদের বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। হয়ত কেউ প্রমোশন পাবেন আবার কারও ডিমোশন হবে।’ শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, ‘সম্মেলনের ভেতর দিয়ে নতুন কমিটি হবে ঠিকই, কিন্তু পুরনো নেতারাই বেশির ভাগ থাকবেন।’ আওয়ামী লীগের কমিটির আকার বাড়বে এমন একটি গুঞ্জন রয়েছে মাঠে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ‘আকার বাড়লেও ডাবল ডিজিটেই থাকবে কমিটির পরিধি ট্রিপল ডিজিটে যাবে না।’
নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র বলেন, ‘আওয়ামীলীগের এবারের সম্মেলন আর পেছাবে না। নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। গত দুই দফা সম্মেলন পিছিয়ে নেতাকর্মীদের ভেতরে এবারও সম্মেলন পিছিয়ে যাবে, এমন একটা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এবার সেই সুযোগ নেই।’ কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, ‘বড় কোনও চমকও থাকবে না এ সম্মেলনে। আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানে কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক, সেই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সভাপতি তেমন আলোচনায় থাকেন না। কারণ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী মনে করেন শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন সভাপতি পদের জন্য আর কেউ যোগ্য নন। তাই এই পদটি আলোচনায় থাকে না।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, আপনারা চমক পাবেন না আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে। তবে আমাদের কাছে চমকপদ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলন। কারণ সম্মেলনে আগামী নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা কিভাবে পালন করব, তার একটি ভিষণ নির্ধারণ করা হবে এই সম্মেলনে। কিভাবে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ সেটি নির্ধারণ করবে এবারের আওয়ামী লীাগের সম্মেলন। লেনিন বলেন, এবারের সম্মেলন এই দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে কারা থাকবেন, কারা যাবেন সেটা একমাত্র নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, ডেলিগেটরা। তবে আমি মনে করি খুব বড় কোন পরিবর্তন আসবে না সম্মেলনে। শুধু কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ ছাড়া।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘এবার নির্ধারিত তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই দলটিতে কে নেতা থাকবেন, আর কে থাকবেন না, এটি নির্ভর করে কাউন্সিলর, ডেলিগেটদের ওপর। তাই আগে থেকে বলা মুশকিল কে থাকবেন, আর কে থাকবেন না।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালনে যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন তারাই কমিটিতে থাকবেন বলে মনে করি।’ তবে তিনি এও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরা নেতৃত্ব নির্বাচন করে তাই সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগবে কমিটি সম্পর্কে কিছু বলতে হলে।’ খবর-বাংলাট্রিবিউন

আরও পড়ুন