নাফাকুমে শুটিং

NewsDetails_01

প্রচার হচ্ছে সিম্ফোনির নতুন বিজ্ঞাপন। এতে রাঙামাটির বিভিন্ন লোকেশনের নান্দনিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বিজ্ঞাপনটির পেছনের গল্প শোনাচ্ছেন আতিফ আতাউর

nafakumউঁচু পাহাড়। চারদিকে সবুজ অরণ্য। মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে পানির ছোট্ট ছড়া। ঘুরতে গিয়ে এমন পরিবেশে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যান অনেকেই। শুধু তা-ই নয়, আদিবাসীদের বর্ণিল জীবনও এখানে অন্য রকম আবেশের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। এমন দৃশ্যমালা নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিম্ফোনির নতুন মডেল জেড সেভেনের বিজ্ঞাপন।

যে জন্য পাহাড়ে

সিম্ফোনি জেড সেভেনের ক্যামেরাকে প্রাধান্য দিয়ে নির্মিত হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। যে কারণে এমন গল্প সাজিয়েছেন বিজ্ঞাপনটির স্ক্রিপ্ট রাইটার গ্রে অ্যাডভার্টাইজিংয়ের সিনিয়র কপিরাইটার আদনান আদীব খান। তিনি বলেন, ‘সুন্দর দৃশ্য দেখলেই মানুষ ছবি তোলার চেষ্টা করে। ভ্রমণে সাধারণত সুন্দর জায়গাতেই যায় তারা। গিয়ে ছবি তোলে। সিম্ফোনি জেড সেভেনের ক্যামেরাকে প্রাধান্য দিয়েই এমন গল্প সাজানো। এর ক্যামেরা দিয়ে বেশ ভালো ছবি তোলা যায়। যার জন্য শেষ দৃশ্যে মোবাইলে তোলা ছবিগুলো দিয়ে একটি প্রদর্শনী করার কথাও উঠে এসেছে বিজ্ঞাপনের গল্পে।’ এই বিজ্ঞাপনের জন্য আরো একটি গল্প লিখেছিলেন তিনি। সেটাও ভ্রমণের। তবে দলবল বেঁধে।

নাফাকুমে প্রথমবার

বান্দরবানের নাফাকুমের নান্দনিক দৃশ্য প্রথমবারের মতো এই বিজ্ঞাপনে উঠে এসেছে। নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, ‘সবাই যে বান্দরবান দেখে অভ্যস্ত, আমরা তার থেকে একটু ভিন্ন অ্যাঙ্গেলে দেখাতে চেয়েছি। নাফাকুম এখনো কোনো বিজ্ঞাপনে দেখানো হয়নি। যে জন্য বিজ্ঞাপনটির জন্য নাফাকুমকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’

যেতে লাগে এক দিন

জুন মাসে রোজার মধ্যে পঁচিশজনের টিম নিয়ে শুটিংয়ের উদ্দেশে বান্দরবানে রওনা দেন সুমন। বান্দরবান থেকে থানচি, সেখান থেকে রেমাক্রিতে একটি রিসোর্টে ওঠেন। রেমাক্রি থেকে নাফাকুম হেঁটে যেতে চার ঘণ্টা। ঢাকা থেকে বাস, নৌকা ও পায়ে হেঁটে নাফাকুমে পৌঁছতে তাদের সময় লাগে পুরো এক দিন।

NewsDetails_03

পাহাড়ি মেয়ের ছবি

বিজ্ঞাপনটিতে একটি পাহাড়ি মেয়েকে ছবি তোলার সময় মুখে হাত দিয়ে হাসি চাপতে দেখা যায়। মেয়েটি জুম ক্ষেতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল। পাহাড়ে এমন গোছানো মেয়েকে দেখে পরিচালক সুমন তাকে দিয়ে দৃশ্যটি নেন। মেয়েটিকে বলা হয় তার ছবি তোলা হবে। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে হাসবে সে। কিন্তু সুমন অ্যাকশন বলার সঙ্গে সঙ্গেই লজ্জায় মুখে হাত চাপা দেয় মেয়েটি। দৃশ্যটি ন্যাচারাল হওয়ায় এটাই রেখে দেন পরিচালক।

সংযোগ ছাড়া ছয় ঘণ্টা

পাঁচটি নৌকায় ভাগ হয়ে নাফাকুমের উদ্দেশে রওনা হন সবাই। মাঝপথে গিয়ে ক্রিয়েটিভদের বহনকারী নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। প্রোডাকশন টিমের নৌকাগুলো অনেক দূরে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করারও উপায় নেই। কারণ থানচির পর থেকেই কোনো মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। ছয় ঘণ্টা পর পেছনের নৌকা আসছে না দেখে আগে চলে যাওয়া নৌকাগুলো ফিরে আসে। তারপর রেমাক্রিতে থেকে পরের দিন ভোরে রওনা দেন নাফাকুমের উদ্দেশে।

লোকেশন ও সময়

পঞ্চাশ সেকেন্ডের এই বিজ্ঞাপনের দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে বান্দরবানের থানচি, রেমাক্রি, নাফাকুম ও তেজগাঁওয়ের কোক স্টুডিওতে। দৃশ্য ধারণে সময় লেগেছে বান্দরবানে চার দিন, আর ঢাকায় এক দিন। জুন মাসে রোজার মধ্যে শুটিং করা হয়।

গান-বাজনার দল ভাড়া

বিজ্ঞাপনে আদিবাসীদের গান-বাজনার দৃশ্য পুরোটাই সেট ফেলে শুটিং করা। থানচিতে একটি পাহাড়ি গানের দল আছে। তারা টাকার বিনিময়ে গান-বাজনা করে। এদের দিয়েই গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দলটিকে তাদের মতো করেই গান করতে বলা হয়। এর ফাঁকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলেন মডেল তানজিম ইমরান।

পেছনে আরো যারা

ব্র্যান্ড সিম্ফোনি। ক্লায়েন্ট এডিসন গ্রুপ। এজেন্সি গ্রে অ্যাডভার্টাইজিং বাংলাদেশ লিমিটেড। চিফ ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর গাওসুল আলম শাওন, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর আকরুন হোসেন শাহিন, আর্ট ডিরেক্টর রিফাত আল হাসান, হেড অব অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং সালাউদ্দিন শাহেদ। প্রোডাকশন হাউস ফেসকার্ড প্রোডাকশন।