মহাতারকা নায়ক রাজ রাজ্জাক আর নেই

NewsDetails_01

নায়ক রাজ রাজ্জাক
নায়করাজ রাজ্জাক আর নেই। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩মিনিটে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

NewsDetails_03

পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার ও ইউনাইটেড হাসপাতালের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান শুভ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাজ্জাদুর রহমান জানান, নায়ক রাজ্জাককে আজ বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সে সময় তার পালস ও ব্লাড প্রেশার পাওয়া যাচ্ছিল না। চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে আমরা নিশ্চিত হই তিনি আর নেই।
মহাতারকা নায়ক রাজ রাজ্জাকের প্রকৃত নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ১৯৪২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই রাজ্জাক অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। তখন রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন।
এরপর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় ইকবাল ফিল্মসে কাজ করার সুযোগ পান। এরপর পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে ‘উজালা’ ছবিতে কাজ করেন। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে ‌’কার বউ’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরী স্টেশন’সহ কয়েকটি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করে তিনি।
১৯৬৫ সালে প্রয়াত জহির রায়হান তাঁকে প্রথম ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে কাস্ট করেন। এতে তাঁর বিপরীতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন সুচন্দা। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো বেশ দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে। দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি নায়করাজ হিসেবে পরিচিতি পান।
তার অভিনীত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে নীল আকাশের নীচে, মাটির ঘর, আগুন, ‘জীবন থেকে নেওয়া’ ‘পিচ ঢালা পথ, মধু মিলন, ‘অশিক্ষিত ‘ছুটির ঘন্টা, ‘রংবাজ’, ‘অনুরাগ’, ‘রাজা সাহেব’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘বেঈমান’, ‘আনারকলি’, ‘বদনাম’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’।
রাজ্জাক প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নায়করাজ শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবেও চলচ্চিত্র অঙ্গনে সফল ছিলেন রাজ্জাক। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম রাজলক্ষী প্রোডাকশন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র। সর্বশেষ তিনি ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি নির্মাণ করেছেন। চলচ্চিত্রের বাইরে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক।
রাজ্জাক পাঁচ সন্তানের জনক। তারা হলেন রেজাউল করিম ওরফে বাপ্পারাজ, নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসাইন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না ও খালিদ হোসাইন ওরফে সম্রাট। এদের মধ্যে বাপ্পারাজ ও সম্রাট বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন।খবর- রাইজিংবিডি ডটকম এর

আরও পড়ুন