বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার

NewsDetails_01

বান্দরবান বিদ্যুৎ অফিস
বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের হয়রানি কারার অভিযোগ বেড়েই চলেছে। ব্যবহারের বিপরীতে বাড়তি বিলের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে গ্রাহকদের সাথে প্রতিদিন অপ্রিতিকর ঘটনা হচ্ছে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের দফতরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক গ্রাহকের বিল যাচ্ছে অপরজনের নামে, আবার কারো বা ব্যবহার না করেও দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিল। এসব কারনে পথে ঘাটেই বিদ্যুৎ বিভাগের কমকর্তা কর্মচারীদের সাথে বাকবিতন্ডার ঘটনাও এখন নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা।
গত সোমবার সকালে জেলা শহরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনের সড়কে একদল গ্রাহক ঘিরে ধরে বিদ্যুৎ বিভাগের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসা কমকর্তা কমর্চারীদের। তারা এসময় জানতে চান সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন জটিলতা সম্পর্কে। এসময় সংবাদকর্মীদের কাছে পেয়ে সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে নানা অভিযোগ-অসংগতিতুলে ধরেন তারা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্যশিয়ার পদে নিযুক্ত আমিনুল হক অভিযোগ করে বলেন, অফিসের নামে প্রতি মাসেই বাড়তি বিল করা হচ্ছে। এখনো প্রায় ৫ হাজার ইউনিটের বাড়তি বিল আমাদের ওপর। গত কয়েক মাসে এই বিলের ব্যাপারে অভিযোগ করার পরও কোন সমাধান হয়নি। তার ওপর আজ আবার শেষ তারিখে এসে বকেয়ার দায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো। একটি সরকারি অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ এভাবে বিচ্ছিন্ন করা দু:খজনক।
কুহালং এর বটতলি পাড়া থেকে আসা হানিফ সরকার নামের অপর গ্রাহক বলেন, আমার ব্যবহার করা মিটারের নম্বর ১৪৪৭৪৯৪৫ হলেও আমাকে ২১৪১১১২১৮ নম্বার মিটারের গ্রাহকের নামে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এসময় বিলের কপি পযর্বেক্ষণ করে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায় উপস্থিত সংবাদকর্মীরা।
একই সময় শহরের ফিষ্ট রেস্তোরার সত্বাধিকারী শাহাদাত উর রহমান ক্ষুব্দ হয়ে বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছি। প্রতি মাসেই ব্যবহারের চাইতে বেশি বিল গুনে গুনে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার টাকার বেশি অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে, এরই মধ্যে ওই বাড়তি বিল পরিশোধের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আমার প্রতিষ্ঠানের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী রেজওয়ান ফেরদাউসের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা উর্দ্ধতন কমকর্তার নির্দেশেই কাজ করছি, অভিযোগ থাকলে নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানাতে পারেন।
একই সময়ে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের অফিসের সামনেও অনেকে নানা অভিযোগ নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। সংবাদকর্মীরা সেখানে গেলে গ্রাহকরা জানান, বিলে নানা প্রকার অসংগতির কথা। নান্নু সরকার নামে এক গ্রাহক বলেন, আমার মিটারে কয়েকমাস ধরে কোনো বিলই আসছে না, না জানি সামনে কি হয়!
এসময় আরেক গ্রাহক আফসান করিম বলেন,মিটার না দেখে ঘরে বসে মিটার রিডিং করার কারনে দেখা যায় পরের মাসে ব্যবহৃত বিলের সাথে ধার্য্যকৃত বিলের কোন মিল থাকে না।
এদিকে এসব বিষয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী চিংহ্লা মং বলেন, অফিসে জনবল সংকট র্দীঘদিনের, উপজেলাগুলোতেও আবাসিক অফিস নেই। উপজেলার গ্রাহকদের টেকনিক্যাল সমস্যাও সদর থেকে গিয়ে সমাধান করতে হয়। সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় গ্রাহকদের বিলে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ পেলে আমরা সেটি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করি।

আরও পড়ুন