বান্দরবানে আমের ফলনে হতাশ কৃষক

NewsDetails_01

বান্দরবানে রাংগোয়া আম। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এই আমের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। পাহাড়ি এলাকায় এই আম উৎপাদনে খুশি কৃষক। দুই মাস আগেও মনকাড়ানো মুকুলে ভরে গিয়েছিল পার্বত্য এলাকার আম গাছগুলো। আশা করেছিল এবার আমের বাম্পার ফলন হবে। চাষিদের মুখে হাসিও ফুটেছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া আর ঝড়-বৃষ্টি কৃষকের হাসি মাখা মুখ অম্লান করে দিয়েছে। যেসব গাছে আমের গুটি এসেছিল তাও বাতাস আর বৃষ্টিতে ঝড়ে গেছে। শুধু আছে বোটাগুলো।

জেলা সদরের গ্যাসমনি পাড়া, ফারুক পাড়া, বেতেল পাড়া, স্যারেন পাড়ার শত শত একর আম বাগানে আম গাছে এ বছর গুটি আসেনি। আর গুটি না আসায় কৃষকের আশায় গুঁড়েবালি। বেশির ভাগ গাছে গজিয়েছে নতুন পাতা।

চাষিরা জানান, অনেক গাছে আমের মুকুল আসার পরে আম ব্যবসায়ীদের কাছে বাগান বিক্রি করে দেন। আবার অনেকে আমের গুটি আসার পরে বাগান বিক্রি করে দেন। আবহাওয়া অনুকূল হলে আমের ফলন ভালো হয়। আর বৈরি হলে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয় ।

গ্যাসমনি পাড়ার কৃষক ভাননেই বম বলেন, এ বছর গাছে গুটি কম আসছে। আশানুরুপ ফল বিক্রি করতে পারব না। যেহেতু মুকুল কম আসছে, ফলও কম আসবে।

NewsDetails_03

স্যারেন পাড়ার কৃষক লাল মেন সান বলেন, পাঁচ একর জমিতে ৬শ আম গাছ আছে। জমিতে রাংগোয়া, আমরুপালি গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছর অধিকাংশ আম গাছে ফুল এবং গুটি আসেনি।হাতাশা কণ্ঠে গ্যাসমনি পাড়ার আরেক কৃষক মিনথান বম বলেন, গত বছর আম বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকার অধিক লাভ করেছি। কিন্তু এ বছর পাহাড়ের আবহাওয়া ভালো না থাকায় আমের ফলন ভালো হবে না। তাই লাভের আশা দেখছি না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, ২০১৩-১৪ সালে ৪ হাজার ৩ শত ১২ হেক্টর জমিতে ৭৩ হাজার ৩ শত ৪ মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ সালে ৪ হাজার ৫ শত ১৮ হেক্টর জমিতে ৭৬ হাজার ৮ শত ৬ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৪ হাজার ৮শত হেক্টর জমিতে ৮২ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল।

আমের বাগান কিনতে আসা মো. মুসা জানান, আমের বাগান কিনতে এসেছি। কিন্তু বাগানগুলোতে আশানুরুপ ফল দেখছি না। দেখি বাগান কিনতে পারি কিনা।

এদিকে, পাহাড়ে আমের উৎপাদন কম হওয়ায় এ বছর ক্রেতাদেরকে অধিক দামে আম ক্রয় করতে হতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন জানান, আমে ফ্রুট সেট হওয়ার সময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে এ বছর পাহাড়ে আমের ফলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। এছাড়াও যে সমস্ত গাছে ফ্রুট সেট হওয়ার আগে বৃষ্টি হয়েছে সেসব গাছে এবার খুব বেশি ফলন আসবে না। তাই এ বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে শঙ্খায় আছে কৃষি বিভাগ।

আরও পড়ুন