বান্দরবানের আকাশে দেখা যাবে থাইল্যান্ডের ফানুস

NewsDetails_01

থাইল্যান্ডে তৈরী ফানুস
থাইল্যান্ডে তৈরী ফানুস
আর মাত্র একদিন, মাহা ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ উপলক্ষ্যে রং-বেরংয়ের বর্ণিল ফানুসের ঝলকানিতে আলোকিত হবে পাহাড়ের রাতের আকাশ। বৌদ্ধ অনুসারীরা উত্তোলন করবে একের পর এক বিভিন্ন ধরণের ফানুস। প্রতিবছর দেশে তৈরী ফানুস উত্তোলন করা হলেও এবার দেশীয় ফানুসের পাশাপাশি বান্দরবানের আকাশে উড়ানো হবে থাইল্যান্ডের তৈরী ফানুস।
বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় মাহা ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ উৎসবের মূল আয়োজন চলবে আগামী কাল ১৫ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। পার্বত্য জেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা’রা মাহা‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ নামে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে থাকে।
মাহা‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’কে সামনে রেখে বান্দরবান শহরের মধ্যমপাড়ায় ঝর্ণা বার্মিজ মার্কেটে থাইল্যান্ডের তৈরী বিভিন্ন রংয়ের ফানুস পাওয়া যাচ্ছে। থাইল্যাল্ডের তৈরি ছোট সাইজের প্রতিটি ফানুস ১৫০টাকা এবং বড় সাইজের ফানুস ২শ টাকা। প্রতিবছর দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী ফানুস উত্তোলন করা হলেও এবার ফানুস উত্তোলনের জন্য আদিবাসীরা সংগ্রহ করছে থাইল্যান্ডের ফানুস।
ফানুস ব্যবসায়ি কোওয়ামে মারমা বলেন, মাহা ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ’ উপলক্ষ্যে তিন থেকে ৪শ থাইল্যান্ডি ফানুস ঢাকা থেকে আনা হয়, সব বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, ব্যাপক চাহিদা থাকার কারনে আরো ৬শ ফানুস আনা হবে।
১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজার মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় বন্ধনার মধ্যে দিয়ে খ্যংওয়া ও খ্যংফিয়া ক্যং এর রথ যাত্রার শুভ উদ্ভোধন, একই দিন রাজারমাঠসহ বিভিন্ন ক্যং থেকে ফানুস বাতি উত্তোলন, রাতভর পাড়ায় পাড়ায় বর্ণিল পিঠা তৈরীর উৎসব এবং মন্দিরে মন্দিরে ছোয়াইং দান (ভাত-তরকারি প্রদান)। ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় ‘ছংরাসিহ্ ওয়াগ্যোয়াই লাহ্ রাথা পোয়েঃ লাগাইমে.. ’ (সবাই মিলে মিশে রথযাত্রায় যায়..) আদিবাসী মারমা’রা এই বিশেষ গানটি পরিবেশন করে মাহারথ যাত্রা শুরু করবে। এ সময় পাংখো (এক ধরণের ভূতের পুতুল) নৃত্য পরিবেশন আর রথ টানতে শত শত আদিবাসীরা রাস্তায় নেমে আসে। রথে জ্বালানো হয় হাজার হাজার মোমবাতি এবং দান করা হয় নগদ অর্থ। রথটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মধ্যরাতে শঙ্খ (সাঙ্গু) নদীতে রথ উৎসর্গ করা হবে। ১৮ অক্টোবর খ্যংওয়া ও খ্যংফিয়া ক্যং এ বিকালে বিহারের উদ্দেশ্যে গমন, পঞ্চশীল গ্রহণ ও ধর্ম দেশনার মধ্যে দিয়ে এই উৎসবের ইতি টানা হবে।
উৎসব কমিটির সূত্রে আরো জানা গেছে, বর্নিল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পর্যায় ক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা,বোমাং রাজা উ চ প্রু, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: জোবায়ের সালেহীন, পুলিশ সুপার সঞ্জিত রায়, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, পৌর মেয়র ইসলাম বেবীসহ অনেকে।
উক্ত দিনের প্রতিটি সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নুতন নতুন পোশাকে শহরের খ্যংওয়া ক্যাং, খ্যংফিয়া ক্যাং, করুণাপুর বৌদ্ধ বিহার, বুদ্ধ ধাতু জাদি, রাম জাদি, সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার, আম্রকানন বিহারসহ অন্যান্য ধর্মীয় ক্যাং বা বিহারগুলোতে প্রার্থনা, ফানুস উত্তোলন এবং ছোয়াইং দানের জন্য পূণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকবে।

আরও পড়ুন