রাজপূণ্যাহ মেলার সময় বাড়ানো সিদ্ধান্ত হয়নি

NewsDetails_01

রাজপূণ্যাহ’য় বোমাংরাজা উ চ প্রু চৌধুরী। (ফাইল ছবি)
বান্দরবানের রাজকর আদায়ের উৎসব ১৩৯তম রাজপূণ্যাহ বুধবার সকাল থেকে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়। তিনদিন ব্যাপি রাজ পূণ্যাহ মেলার সরকারী অনুমতি অনুসারে আজ মেলার শেষদিন। রাজপূণ্যাহর মেলার সময় বাড়ানো হচ্ছে কিনা এ নিয়ে মেলার দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল থাকলেও শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মেলার সময় বাড়ানোর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেলা শুরু পর থেকে আজ শুক্রবার রাত পর্যন্ত মেলায় লোক সমাগমের বিগত বছরের সব রেকর্ড অতিক্রম করে। মেলায় ছিল উপচেপড়া দর্শনার্থীদের ভীর। কিন্তু মেলায় ব্যাপক হারে জুয়ার আসর ও ভেরায়টিশো’র নামে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনের কারনে ব্যাপক সমলোচনার মুখে পড়ে মেলার আয়োজন। বৃহস্পতিবার রাতে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন এবং অশ্লীল প্রচার-প্রচারণা চালানোর কারনে স্থানীয় যুবকরা মেলার একাধিক স্টলে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
আরো জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে রাজপূণ্যাহ মেলায় জুয়ার আসর সীমিত থাকলেও এবার ক্ষোধ পুলিশের উপস্থিতিতে রাজার মাঠ প্রাঙ্গনে অন্তত বিভিন্ন ধরণের ৮০টি জুয়ার আসর বসে। ফলে দূর্গম এলাকা থেকে আসা আদিবাসীরা বিভিন্ন প্রলোভনে মেলার জুয়ার আসরে যোগ দিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঘরে ফিরছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এই ব্যাপারে রাজপূণ্যায় আসা দর্শনার্থী রকিবুল হাসান পাহাড়বার্তাকে বলেন,দূর্গম এলাকা থেকে মেলা দেখতে আসা আদিবাসীরা দিনে কয় টাকা আয় করে, তারা জুয়ায় বসে সব হারিয়ে ঘরে ফিরছে, এর দায় কার।
বোমাং রাজ পরিবার সূত্র জানায়, বৃটিশ শাসন আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা রাজা পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়।
আরো জানা যায়, বর্তমানে রাঙ্গামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকার বান্দরবানের ৯৫টি, রাঙামাটির রাজস্থলি ও কাপ্তাই উপজেলার ১৪টি মৌজা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। দুইশত বছরের ঐতিহ্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলা আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে। বর্তমানে বোমাং সার্কেলের ১৭তম রাজা হিসাবে দায়িত্বে আছেন বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী।
এই ব্যাপারে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ পাহাড়বার্তাকে বলেন, রাজপূণ্যার সময় বাড়ানোর কোন সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি, তিনি আরো বলেন, যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছেনা বাড়ানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত,তিনদিন ব্যাপি রাজপূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে বান্দরবানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়,অনুষ্ঠানস্থলে ৪শ পুলিশের পাশাপাশি লাগানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামরা এবং নিয়োগ করা হয় সেচ্ছাসেবকদের।

আরও পড়ুন