বিদ্যুতের নতুন স্বপ্নে বিভোর থানচিবাসী

NewsDetails_01

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুর্গম উপজেলা থানচি। স্বাধীনতার এত বছরেও এ উপজেলার বাসিন্দারা পায়নি বিদ্যুতের আলো। তাই বিদ্যুৎ ছিল তাদের কাছে শুধুই স্বপ্ন। বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় এই উপজেলার বাসিন্দারা পিছিয়ে পড়েছে সব ক্ষেত্রে। তবে দীর্ঘ ৪৫ বছর পর তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।

আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মিলানায়তনে বিদ্যুৎ সরবরাহ উদ্বোধন করেন। আর উদ্বোধনের পরই থানচিবাসীর অন্ধকার ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের জুনে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে থানচিতে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৫- ২০১৬ সালে অর্থবছরের মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক স্বল্পতার কারণে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হয়।

জানা যায়, থানচি উপজেলার বলিপাড়ায় বসানো হয়েছে বিদ্যুৎ এর সাব স্টেশন। থানচি বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের অধীনে চিম্বুক থেকে বলিপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ ৩৩ কেভি এবং বলিপাড়া থেকে থানচি বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ ১১ কেভি নতুন লাইন স্থাপন করা হয়েছে।

আরো জানা যায়, প্রথমবারের মত থানচি উপজেলায় ৩শ গ্রাহক এই বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছেন।

NewsDetails_03

থানচি উপজেলার ছান্দাক পাড়ার বাসিন্দা মং থুই নু মার্মা বলেন, এতদিন বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় প্রযুক্তি ক্ষেত্রে থানচির ছাত্র-ছাত্রীরা অনগ্রসর ছিল। আর এখন বিদ্যুতায়নের ফলে সমতল জেলাগুলোর মত তারাও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।

থানচি উপজেলার আরেক বাসিন্দা চ হ্লা মং বলেন, উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করতো কুপির বাতি জ্বালিয়ে। আর এখন বিদ্যুৎ আসায় তারা বিদ্যুতের আলোয় পড়ালেখা করতে পারবে।

থানচি বাজারের ব্যবসায়ী জসীম বলেন, থানচিতে বিদ্যুৎ আসবে তা কল্পনার বাইরে ছিল। এখন আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।

থানচির স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা সিংসিং নু বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে উপজেলার স্বাস্থ্য খাত পিছিয়ে ছিল। বিদ্যুতের অভাবে অপারেশন করতে না পারায় গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হতো জেলা সদরে। সত্যিই বিদ্যুৎ পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো বলেন, বিদ্যুৎতায়নের ফলে পিছিয়ে পড়া এই এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও তিনি থানচিবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৫ বছর পর বিদ্যুৎ এর সুবিধা ভোগ করছে থানচি উপজেলার বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন