জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বান্দরবান থেকে রোহিঙ্গা সরানোর সিদ্ধান্ত

NewsDetails_01

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় থেকে ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শরনার্থীকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির পাশাপাশি বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্পর্শকাতর এলাকা হওয়ায় জেলার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে। তবে নানা জটিলতার কারণে মিয়ানমার জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের আপাতত সরিয়ে আনা হচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারে সংঘাত সৃষ্টির পর থেকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এবং তুমব্রু সীমান্তের বেশক’টি পাহাড়ে অবস্থান করছে ২৫ হাজারের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গারা। মূলত সীমান্ত অতিক্রম করে অনুপ্রবেশের প্রথমদিকে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিজিবি’র বাধার কারণে তারা সেখানে আটকা পড়ে। প্রায় এক মাস তারা সেখানে থাকলেও এখন প্রশাসন তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিতে চায়।
বান্দরবানের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আজিজুর রহমান বলেন,পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় জঙ্গিবাদের উত্থান হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত তাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় রাখবো।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় একসময় রোহিঙ্গা সলিডারি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর ঘাঁটি থাকলেও বর্তমানে বান্দরবানে রুমা, থানচি উপজেলায় মিয়ানমারের আরকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি), আরকান আর্মির মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী শসস্ত্র সংগঠন সক্রিয় থাকায় বান্দরবানের তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, এমন মত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়লে দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে।
গত ২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের এসব রোহিঙ্গা বান্দরবানের সীমান্তের দূর্গম পাহাড়ে অবস্থান করলেও নিয়মিত ত্রাণ সুবিধা পেয়ে আসছিল। নতুন স্থানেও যেন সেটা অব্যাহত থাকে এমন দাবি মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের।বাংলাদেশের তুমব্রু সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত বাকি ১৫ হাজার রোহিঙ্গাকে রাষ্ট্রীয় জটিলতার কারণে আপাতত সরিয়ে আনা যাচ্ছেনা। জটিলতা কাটিয়ে উঠলে তাদেরও সরিয়ে আনা হবে।
মিয়ানমারের বুচিডং থেকে আসা হাফেজ মো. হামিদ আহম্মদ বলেন, আমরা কখনো কল্পনাও করি নাই যে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে, এই ধারা যাতে অব্যাহত থাকে।
এদিকে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা যাতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম উপজেলাগুলোসহ বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়ক পথসহ চেকপোষ্টগুলো দিয়ে আসা প্রতিটি গাড়ীর যাত্রীদের উপর নজর রাখার পাশাপাশি তল্লাশী চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলার নাগরিকদের অযথা হয়রানি এড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে রাখার জন্য প্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন,রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকার সতর্কতা অবলম্বন করছে,জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে অবস্থানরত সব রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন